টয়লেটের সামনে ময়লা আর ঘামে তৈরি হয় লাচ্ছা সেমাই
বাইরে থেকে গ্রামের অন্য যেকোনো বাড়ির মতো মনে হলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার স্বল্প মারিয়ায় অবস্থিত বাড়িটিতে অবৈধ ফ্যাক্টরি স্থাপন করে গোপনে চলছিল বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন নিম্নমানের সেমাই তৈরি। পাশেই আরেকটি ঘরে বোম্বে চানাচুরের প্যাকেটের আদলে মালা বোম্বে চানাচুর তৈরি হয়।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খালি গায়ে সামিয়া লাচ্ছা সেমাই ফ্যাক্টরিতে সেমাই তৈরি করেন শ্রমিকরা। ময়লা পানিতে ময়দা মিশিয়ে কনুই পর্যন্ত হাত ঢুকিয়ে তৈরি কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। কপাল থেকে সেখানে ঝরে পড়ছে ঘাম। টয়লেটের পাশে ময়লা মেঝেতে রাখা হচ্ছে সেমাই। পোড়া তেল বার বার ব্যবহার করে বানানো হয় চানাচুর।
কিশোরগঞ্জে এমনি পরিবেশে অবৈধ দুটি ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে অস্বাস্থ্যকর স্থানে তৈরি করা বিপুল পরিমাণ সেমাই ও চানাচুর জব্দ করেছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় দুই ফ্যাক্টরির মালিককে সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় প্রায় ৪ টন সেমাই ও চানাচুর। সিলগালা করে দেয়া হয় ওই দুটি ফ্যাক্টরি।
সোমবার দুপুরে গোপনে খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার স্বল্প যশোদল গ্রামে অভিযান চালান র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। আবাসিক এলাকায় অবৈধ ফ্যাক্টরিতে নিম্নমানের সেমাই ও চানাচুর তৈরির খবরে বিস্মিত এলাকাবাসী। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের খাবার খেয়ে শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
র্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়ক এম শোভন খান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে বাজারে বিক্রির জন্য সরকারের অনুমোদন ছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করে নিম্নমানের চানাচুর ও সেমাই তৈরি করা হচ্ছিল। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় র্যাব।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক কিশোরগঞ্জ কালেক্টরেট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এইচএম খোদাদাদ হোসেন বলেন, অভিযানের সময় দুটি ফ্যাক্টরি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। সেমাই ফ্যাক্টরির মালিক রফিকুর রহমানকে দুই লাখ টাকা আর চানাচুর ফ্যাক্টরির মালিক দেলোয়ার হোসেনকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া অভিযানে জব্দ করা তিন টন সেমাই ও এক টন চানাচুর আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নূর মোহাম্মদ/এএম/এমএস