রাজশাহী বোর্ডে শীর্ষে জয়পুরহাট, তলানিতে নাটোর
এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেশসেরা হয়েছে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড। এক ধাপ উপরে উঠলেও বোর্ড সেরা হতে পারেনি শিক্ষানগরী খ্যাত রাজশাহী। সার্বিক ফলাফলে এবার বোর্ডে দ্বিতীয় হয়েছে। আর টানা দ্বিতীয়বারের মতো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে জয়পুরহাট।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. আনারুল হক প্রামাণিক আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের ফলাফল ঘোষণা করেন। এসময় বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বোর্ডের সার্বিক ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মধ্যে ৯৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ পাশের হারে শীর্ষে রয়েছে জয়পুরহাট জেলা। জেলার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৯ হাজার ৩২৪ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৮ হাজার ৮৫৫ জন।
জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ৪৯১ জন। ৯৪ দশমিক ১৪ শতাংশ ছাত্র এবং ৯৫ দশমিক ৮২ শতাংশ মেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এ জেলায়। ৯২ দশমিক ১২ শতাংশ পাসের হার নিয়ে গত বছরও বোর্ড সেরা ছিল জয়পুরহাট।
৯২ দশমিক ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ায় বোর্ডে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে শিক্ষা নগরী খ্যাত রাজশাহী। এখানকার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩২ হাজার ২৯৯ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৯ হাজার ৯৮৫ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ১০৮ জন। রাজশাহীতে ৯১ দশমিক ৯৬ শতাংশ ছাত্র এবং ৯৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। ৮৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ায় গত বছর বোর্ডে তৃতীয় ছিল রাজশাহী জেলা।
দুই ধাপ উপরে উঠে বোর্ডে তৃতীয় অবস্থানে বগুড়া জেলা। এখানকার ৯২ দশমিক ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে এবার। এ বছর এ জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩৫ হাজার ১৯ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩২ হাজার ২৬৫ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ১৮৬ জন। বগুড়ায় ৯০ দশমিক ৭৩ শতাংশ ছাত্র এবং ৯৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর ৮৬ দশমিক ৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ায় বোর্ডে পঞ্চম অবস্থানে ছিল বগুড়া।
টানা তৃতীয়বারের মতো বোর্ডে চতুর্থ অবস্থানে নওগাঁ জেলা। এবার জেলায় পাসের হার ৯১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এখানকার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৫ হাজার একজন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২২ হাজার ৮৭৬ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৬১৫ জন। নওগাঁয় ৮৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছাত্র এবং ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর এ জেলায় পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
তিন ধাপ নেমে এবার পাবনা জেলার অবস্থান বোর্ডে পঞ্চম। এখানকার পাসের হার ৯২ দশমিক ২৩ শতাংশ। এ জেলার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৯ হাজার ৫৪২ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৬ হাজার ৯৫০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৮৪২ জন। এখানকার ৮৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ ছাত্র এবং ৯২ দশমিক ৬৪ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর এ জেলার পাসের হার ছিল ৮৮ দশমিক ২০ শতাংশ।
৯১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ায় বোর্ডে ষষ্ঠ অবস্থানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। এখানকার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৫ হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৪ হাজার ৫১৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ৩১ জন। চাঁপাাইনবাবগঞ্জে ৮৯ দশমিক ৫১ শতাংশ ছাত্র এবং ৯২ দশমিক ৬৭ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। ৮৩ দশমিক ১৭ শতাংশ পাসের হারে গত বছর সপ্তম অবস্থানে ছিল এ জেলা।
এক ধাপ নেমে বোর্ডে সিরাজগঞ্জ জেলার অবস্থান সপ্তম অবস্থানে। এ জেলায় পাসের হার ৯০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এখানে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩৬ হাজার ৭৩৪ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩৩ হাজার ৩৬৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৩৯০ জন। সিরাজগঞ্জে ৯০ দশমিক ৪১ শতাংশ ছাত্র এবং ৯১ দশমিক ৩৪ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর এখানকার পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ০৪ শতাংশ।
ফলাফলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বোর্ডের তলানিতে নাটোর জেলা। এ জেলায় পাসের হার ৮৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এখানে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ হাজার ১৯ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৮ হাজার ১০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে একহাজার ৫২৭ জন। নাটোরে ৮৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ ছাত্র এবং ৯২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। ৮২ দশমিক ৩০ শতাংশ পাসের হার নিয়ে গত বছরও একই অবস্থানে ছিল নাটোর জেলা।
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড জানিয়েছে, এ বছর সবমিলিয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৪ হাজার ৮৩৫ জন। ৯১ দশমিক ৬৪ শতাংশ হারে পাস করেছে এক লাখ ৮৬ হাজার ৮২৮ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২২ হাজার ৭৯৫ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৪৯৮ জন। এবার বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল ৫৯২ জন পরীক্ষার্থী।
এ বছর ৯২ দশমিক ৯৬ শতাংশ ছাত্রী এবং ৯০ দশমিক ৪৪ শতাংশ ছাত্র পাস করেছে। মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ২২ হাজার ৭৯৫ জন। এর মধ্যে ১১ হাজার ৬৮৬ জন ছাত্রী এবং ১১ হাজার ১০৯ জন ছাত্র। গত বছর জিপিএ ৫ পেয়েছিল মোট ৫ পেয়েছে ১৯ হাজার ৪৯৮ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ৯ হাজার ৪৮০ জন ছাত্রী এবং ১০ হাজার ১৮ জন ছাত্র।
এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৮০ হাজার ৫০১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৭৪৮ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ২২ হাজার ৬৯০ জন। নিয়মিত পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৫৯২ জন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস/জেআইএম