ফণীর প্রভাবে নওগাঁয় ধানের ব্যাপক ক্ষতি
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে নওগাঁয় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের কারণে পাকা ও আধাপাকা ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এছাড়া ধান কাটতে শ্রমিকের বাড়তি মজুরি গুণতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
বৈশাখের তপ্ত রোদের মধ্যে কিছুদিন আগ থেকে শুরু হয় ইরি-বোরো ধান কাটামাড়াই। মনের আনন্দে ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন কৃষকরা। তবে শেষ মুহূর্তে ধান ঘরে তোলার আগে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে শুক্রবার বেলা ১২টা থেকে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত নওগাঁর উপর দিয়ে বয়ে যায় ঝড়-বৃষ্টি। এতে জেলার ১১ উপজেলার মাঠের অধিকাংশ ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এখন পানির উপরে ভাসছে পাকা ও আধাপাকা ধান। হাঁটু সমান পানিতে নেমে ধান কাটতে হচ্ছে কৃষকদের।
সদর উপজেলার বরুনকান্দি গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, তিন বিঘা জমিতে আঠাশের ধান রোপন করেছেন। সপ্তাহ খানেক পর ধান কাটতে হতো। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টিতে ধান জমিতে শুয়ে পড়েছে। আধাপাকা ধান এখন পানিতে ভাসছে। পানিতে থাকলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। তাই শ্রমিক দিয়ে কাটতে হচ্ছে। যেখানে চার পাঁচজন শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা যেত এখন সেখানে সাত আটজন দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আবার ফলন যেখানে বিঘাপ্রতি ২৫-২৬ মন হতো সেখানে এখন ১৮-২০ মনের মতো হবে।
বক্তারপুর গ্রামের কৃষক এনামুল হোসেন বলেন, এক বিঘা সাত কাঠা জমিতে ৫৮ জাতের ধানের আবাদ করেছেন। ঝড়ে জমিতে ধান শুয়ে পড়ায় দুই দিনের মধ্যে ধানে গাছ গজিয়েছে। এতে ফলন কম হবে। খড় পচে যাবে। যেখানে শ্রমিকদের দাম ছিল বিঘাপ্রতি আড়াই হাজার টাকা। এখন সেই ধান কাটতে শ্রমিকের খরচ লাগবে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এতে আমাদের লোকসানে পড়তে হচ্ছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে জেলার প্রায় ২৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। ফণীর প্রভাবে জেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান হেলে পড়েছে। যা সম্পূর্ণ পরিপক্ক ধান। এতে কোনো ক্ষতি হবে না। বিধায় ফলনের বিপর্যয়ের সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়ায় ভালো হলে আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আব্বাস আলী/এএইচ/পিআর