সাগরে শক্তিশালী হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ফণী, প্রস্তুত পটুয়াখালী প্রশাসন
ঘূর্ণিঝড় ফণী যতই উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে পটুয়াখালী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর ততটাই উত্তাল হয়ে উঠছে। সাগর উত্তাল থাকায় এরমধ্যে সাগরে অবস্থান করা সকল মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকাসমূহ মৎস্য বন্দরে ফিরে আসতে শুরু করেছে। তবে এ ঘূর্ণিঝড়ে আঘাত হানলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার দুপুরে আবহাওয়ায় অধিদপ্তর ৪নং সতর্ক সংকেত জারি করার পর থেকেই উপকূলজুড়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী নিয়ে চলছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ফনী বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে এমন খবরে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে উপকূলজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে উত্তাল ঢেউয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। সমুদ্র সৈকতে আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। ইতোমধ্যে গভীর সমুদ্র থেকে মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাগুলো তীরে ফিরতে শুরু করেছে। আর যেসব ট্রলার ও নৌকা সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল তাদের যাত্রা বাতিল করেছে।
এ দিকে, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে দূর্গত এলাকা থেকে যাতে মানুষকে দ্রুত আশ্রায় কেন্দ্রে নেয়া যায় সেজন্য সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। আরও সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টরা দফায় দফায় বৈঠক করছেন।
পটুয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র অফিসার মো. ফিরোজ আহমেদ জানান, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে দুর্গত এলাকা থেকে যাতে মানুষকে দ্রুত আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া, দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা, প্রাথমিক চিকিৎসা ও তথ্য সংগ্রহে আমাদের বাহিনী সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. রাহাত হোসেন জানান, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ১১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে আর পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে ফণী। ঘূর্ণিঝড়টি ঘণীভূত হইয়া উত্তর উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হতে পারে যেটি আমাদের জন্য বিপদ বয়ে আনতে পারে।
তিনি আরও জানান, পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ উপকূলে বর্তমানে গোমট ভাব বিরাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় সাগরে শক্তিশালী হলে যেমন আবহাওয়া হয় ঠিক আমাদের এ দিকে তেন আবহাওয়া বিরাজ করছে। তিনি আরও জানান, রাত ৯টা পর্যন্ত তাপমাত্র ছিল ২৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হেমায়েত উদ্দিন জানান, ইতোমধ্যে দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার মজুত করাসহ প্রয়োজনীয় নগদ অর্থ সংগ্রহে রাখা হয়েছে। এদিকে, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকলেও ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলে যেন আঘাত না হানে এমনটাই প্রত্যাশা উপকূলবাসীর।
মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এমএএস/পিআর