দিবস-টিবস বুঝি না, কাজ না করলে পেট চলবে না
ঝিনাইদহ শহরের মডার্নপাড়ার একটি ওয়েল্ডিং কারখানার শ্রমিক ইয়াছিন ও তার সঙ্গীদের মে দিবসে কাজ করতে দেখা গেছে। প্রতিদিনের মতো বুধবার সকালেও কাজ করেছেন তারা।
মে দিবস সরকারি ছুটি তারপরও কেন আপনারা কাজ করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ইয়াছিন বলেন, ভাই শুক্রবারে ছুটি তাই আজ আমাদের ছুটি নেই। মালিক কাজ করতে বলেছেন সেজন্য কাজ করছি। মে দিবস-টিবস বুঝি না। বুঝি একদিন কাজ না করলে পরেরদিন আর পেটের ভাত জোগাড় হবে না। সারাদিন কাজ শেষে টাকা পেয়ে সন্ধ্যায় বাজার করে বাড়ি যাব।
ঝিনাইদহ ধোপাঘাটা ব্রিজের ওপর কথা হয় রিকশা চালক হানিপ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের আর মে দিবস। গতকাল মাইকিং করে বলেছিল গাড়ি চালানো বন্ধ করে আজ সকালে র্যালি ও আলোচনা সভায় থাকতে হবে। সকালে গিয়ে র্যালি করলাম। র্যালি শেষে শ্রমিক নেতারা বক্তব্য দিলেন। শুনে চলে আসলাম। কাজের কাজ কিছুই হলো না। মাঝ খান থেকে দিনের অর্ধেক বেলা ভাড়া মারতে পারলাম না। এখন ভাবছি দিনশেষে মালিককে রিকশা ভাড়ার টাকা দিয়ে আমি কি নিয়ে বাড়ি যাব।
স্থানীয় আরেক শ্রমিক বলেন, মে দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর এখানে আলোচনা সভা শুনতে আসি। এখানে এসে শুধু নেতাদের সুন্দর সুন্দর কথাই শুনে যাই। কিন্তু আমাদের জীবনের কোনো পরিবর্তন হয় না। পরিবর্তন হয় নেতাদের।
প্রতি বছরের ১ মে বিশ্বের কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও দাবি আদায়ে মহান ‘মে দিবস’ পালিত হয় ঠিকই, কিন্তু শ্রমিকদের সব চাওয়া-পাওয়া আগের মতোই থেকে যায়। ঝিনাইদহ শহরের খাবার হোটেলগুলো একবেলা বন্ধ করে রাখে। একবেলা পরিবহন না চালিয়ে শ্রমজীবী সংগঠনগুলো প্রতীকী কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু বাস্তবে শ্রমিকদের কোনো উন্নয়ন হয় না।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এএম/এমকেএইচ