ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ছাত্রকে পিটিয়ে অজ্ঞান করেই শিক্ষক উধাও

প্রকাশিত: ০৮:৩৩ এএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে পিটিয়ে অজ্ঞান করলেন এক শিক্ষক। বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে নড়াইলের মাইজপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সবুজ হোসেন মোল্লাকে (১৫) বেধড়ক পিটিয়ে অজ্ঞান করার ঘটনাটি ঘটান বিজ্ঞানের শিক্ষক মিনহাজ।

বিষয়টি নিয়ে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। আহত সবুজ হোসেন মাইজপাড়া ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামের ইলাহী মোল্যার ছেলে।

এলাকাবাসী ও স্কুল ছাত্রদের সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে টিফিনের পর দশম শ্রেণির বিজ্ঞানের ক্লাস চলছিলো। সে সময় বিজ্ঞানের শিক্ষক মিনহাজ স্যার বিজ্ঞান বইয়ের তড়িৎ বিভাগ থেকে একটি অঙ্ক করতে দেন। ক্লাসে উপস্থিত ২৯ জন শিক্ষার্থীর কেউই অঙ্কটা না পারলে ষষ্ঠ শ্রেণির একজন ছাত্রকে ডেকে এনে দশম শ্রেণির সব ছাত্রছাত্রীকে (১৬ জন ছাত্র ও ১৩ জন ছাত্রী) কান মলতে বলেন। এসময় সবুজ মোল্যা স্যারকে বলেন, স্যার আমরা হলাম স্কুলের সিনিয়র ছাত্র। কয়েকদিন পরে স্কুল থেকে চলে যাব। আমাদের জুনিয়রদের দিয়ে কান মলালে আমরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারবো না। এ কথা শুনে শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন ওই বদমায়েশ বাদে সকলের কান মলে দিয়ে আয়।

তখন ওই ছাত্র সবুজ বাদে সবার কান মলে চলে যায়। এরপর ক্লাস শেষে শিক্ষক সবুজ মোল্যা লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে গিয়ে সেখানে থাকা মোটা বেতের লাঠি দিয়ে সবুজকে বধড়ক পেটাতে থাকেন এবং বলেন কাল থেকে তোকে যেন আর স্কুলে না দেখি। মার খেয়ে সবুজ টেবিলের নীচে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে শিক্ষক দ্রুত স্কুল ত্যাগ করেন।

আহত সবুজ জাগাে নিউজকে জানায়, স্যারের মার খেয়ে কিছুক্ষণ পরে জ্ঞান ফিরলে আমি আস্তে আস্তে উঠে শাহান শাহ্ সর্দার স্যারকে বিষয়টি বলি ও আমার শরীরের অবস্থা দেখাই। স্যার আমাকে বলেন, আমার করার কিছুই নাই।
সে সময় প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার দত্ত ও সহকারী প্রধান শিক্ষক রাশিদা ম্যাডাম উপস্থিত ছিলেন। তারাও আমার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। বরং তারা বলেন, স্যার রাগে একটু মেরে বসেছেন। এরকমতো বাবা মা`ও মারেন। এ নিয়ে তুমি কিছু করলে ওই স্যারের চাকরি চলে যাবে।

এ ঘটনার পরে এলাকা ত্যাগ করেছেন ওই শিক্ষক। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আহত সবুজের বাবা ইলাহী মোল্ল্যা জাগো নিউজকে বলেন, ছেলে-মেয়েকে স্কুল লেখা পড়ার জন্য শিক্ষকরা একটু-আধটু মারতেই পারেন। তাই বলে এমন মার আমি আমার জন্মেও দেখিনি। তিনি এমন পাষণ্ড কাজের বিচার দাবি করেন।

মাইজপাড়া হাট বাজার সমিতির সভাপতি ফরিদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরাও লেখাপড়া করার সময় স্যারদের পিটুনি খেয়েছি। কিন্তু এরকম আঘাত করা দেখিনি। আর মিনহাজ স্যার কেমন মাস্টার যে এভাবে মেরে তাকে একটিবারও চিকিৎসার কথা না ভেবে ফেলে রেখে চলে যেতে পারেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার দত্ত অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি এ ঘটনাটিকে অপরাধ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটা স্কুলের ব্যাপার। এলাকার লোকদের নিয়ে বসবো আমরা। এর বেশি তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম মোর্তুজা স্বপণ ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে বসার পর এ নিয়ে কী করা যায় তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বুধবার রাতে অসুস্থ সবুজ মোল্যাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাফিজুল নিলু/এমজেড/আরআইপি