ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

তিস্তার চরাঞ্চলে বানভাসি মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৯ এএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তিস্তা, ধরলার পানি প্রবেশ করে জেলার কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে শতাধিক একর আবাদী জমি আর ঘর বাড়ি। নতুন করে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। চরাঞ্চলের বানভাসি মানুষেরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় লালমনিরহাট জেলার তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পাউবো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

সরেজমিনে লালমনিরহাট জেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের পাক শেখ সুন্দর, আরাজি শেখ সুন্দর, ঠাংঝাড়া, নিজ শেখ সুন্দর ১,২,৩,৬,৭,৯ নং ওয়ার্ডে গড্ডিমারীর, দোয়ানী,ছয় আনী, পিত্তিফাটা, সিংঙ্গীমারী, চর ধুবনী, চর সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী,পাটিকাপাড়া, তিস্তা পাড়ের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার বিশ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।

দেখা গেছে, সানিয়াজান ইউনিয়নের ৯নং পাক শেখ সন্দুর ও ৬নং নিজ শেখ সুন্দর গ্রামে ১৬টি পরিবারে ঘরবাড়ি তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়েছে। পাক শেখ সুন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। ওই এলাকায় চলাচলের জন্য পাঁচটি বাঁশের সাকো ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষ ও স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রী।

এদিকে জেলার কয়েক হাজার একর আমন ধান ক্ষেতসহ অনেক ফসলি জমি তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে। চর এলাকাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের ছয়আনী গ্রামের শিউলী বেগম জাগো নিউজকে বলেন, আজ এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। এখননো কোনো ধরনের সাহায্য পাইনি।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী এলাকার তিস্তার পানির প্রবল স্রোতে গত দুই মাস ধরে তালেব মোড়ে সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় হাতীবান্ধা-বড়খাতা বাইপাস সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।

গড্ডিমারী সড়কের নির্মাণাধীন বাঁশের পাইলিং ফের ভেঙে গেছে। সেখান দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকে অদূরের মিলন বাজার গড্ডিমারী যাতায়াতের অপর একটি সড়কের ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার জনগণ।

গড্ডিমারী গ্রামের তালেব মোড়ের মোজাম্মেল হক জাগো নিউজকে জানান, গত দুইমাসে আমার দশ বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আর মাত্র বাড়ি ভিটে টুকু বাকি। বিলাপ করছিলেন দোহাই তিস্তা দোহাই আর ভাঙিস না, বাড়ি ভিটে টুকুই শেষ সম্বল।

সানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ফজলুল হক জাগো নিউজকে জানান, পাক শেখ সুন্দর এলাকায় ২০ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়ছে পরিবারগুলো। কয়েক দিনের পানিতে ডুবে থাকা কয়েক হাজার রোপা আমন ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
    
এদিকে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম আঙ্গোরপোতায় তিস্তা নদীর পানি প্রবেশ করে তিন দিন ধরে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি। উপজেলার সদ্য বিলুপ্ত ১১৯, ১২০ নং বাঁশকাটায় ছিটমহলে ধরলার নদীর পানির প্রবল স্রোতে ভেঙে গেছে ছিট রক্ষা বাঁধ।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা (পি,আই,ও) ফেরদৌস আলম জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলায় পানিবন্দি পরিবারের মাঝে শুকনো চিড়া, চিনি বিতরণ করা হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারের জন্য মাত্র ১২ টন জিআরের চাল পেয়েছি। এখন সেগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। আরও ত্রাণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করছি।

রবিউল হাসান/এমজেড/আরআইপি