জুথির পাশে কেউ বসে না
বিরল রোগে আক্রান্ত সাত বছর পাঁচ মাস বয়সী জুথি আক্তার। রোগটির কারণে তার বাম কান, গাল ও গলায় চামড়া ঝুলে পড়ছে।
পরিবার থেকে জানানো হয়েছে জন্মের পর থেকেই তার এ সমস্যা। কিন্তু কোনো দিনও তাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যায়নি তার বাবা-মা। পরে আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। জুথি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ তলার ৬২৫নং বেডে চিকিৎসাধীন। গত দুই মাস ধরে এ হাসপাতালে মেয়ে চিকিৎসা চালাতে কৃষক বাবা নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
জুথি শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পূর্বকোটাপাড়া গ্রামের বাদশা সরদারের মেয়ে। সে ব্র্যাক গণশিক্ষার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।
জুথির বাবা বাদশা সরদার জানান, মেয়ের রোগ নিয়ে তিনি চরম বিপাকে পড়েছেন। কৃষি করে যেসব ফসল ঘরে তুলেন তা বিক্রি করে চলতে হয় সারা বছর। এতে করে চলতে খুব কষ্ট হয়। এ অবস্থায় মেয়ের চিকিৎসা করানো খুবই ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।
জুথির মা আসমা বেগম জানান, জুথির জন্মের পর কান, গাল ও গলায় লাল দাগ ছিল। মনে হচ্ছিল জন্মদাগ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাল দাগের স্থান থেকে মাংস বাড়তে থাকে। কিন্তু গত দুই বছর থেকে ওইসব স্থানে মাংসপিন্ডের মতো বেড়েই চলেছে। নিচের অংশে চামড়া ঝুলছে।
তিনি জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. রেহানা আউয়াল সুমী জুথির সব পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানান, রোগটি বিরল। অপারেশনের পরামর্শ দেন ওই চিকিৎসক। কান, গাল ও গলায় তিনটি স্থানেই অপারেশন করতে হবে। কিন্তু চিকিৎসা, ওষুধ, ইনজেকশন কিনতে প্রায় দুই লাখ টাকা প্রয়োজন। এত টাকা তাদের পক্ষে জোগার করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
জুথি জানায়, স্কুলে গেলে তার পাশে অন্যরা বসতে চায় না। এ কষ্টে সে আর স্কুলে যেতে চায় না। কিন্তু লেখাপড়া করতে চায় জুথি।
পালং ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মেম্বার ফিরোজা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, জুথির বাড়ি আমার ওয়ার্ডে। খবর পেয়ে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সে বিরল রোগে আক্রান্ত। আমাদের মানব কল্যাণ যুব সংস্থা নামে একটি সংগঠন আছে, সেখান থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছিলাম জুথির পুরিবারকে। তার ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে।
জুথির বিষয়ে কথা বলতে পারবেন ০১৭৩৮ ১৯৭৯৪২ নম্বরে।
ছগির হোসেন/এমএএস/এমএস