মিরনের মৃত্যুতে বাবা অজ্ঞান, ছেলেকে দেখতে এখন দেশের পথে
কুমিল্লা নগরীতে সহপাঠীদের ছুরিকাঘাতে মোমতাহিন ইসলাম মিরন নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। সে কুমিল্লা নগরীর মডার্ণ হাইস্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
গতকাল রোববার শবে বরাতের রাতে এ ঘটনা ঘটে। সে জেলার সদর উপজেলার ঝাগুরঝুলি বিষ্ণুপুর এলাকার সিঙ্গাপুর প্রবাসী আবুল কালাম আজাদের ছেলে।
মিরনের পরিবার নগরীর পূর্ব বাগিচাগাঁও এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। সে ৪ ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। এদিকে মিরনের প্রবাসী বাবা দেশে আসার পরই দাফন সম্পন্ন হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি কুমিল্লা মডার্ণ হাইস্কুলের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বসা নিয়ে মিরনের সহপাঠী আবিরের সঙ্গে ৭ম শ্রেণির পল্টুর বিরোধ সৃষ্টি হয়। রাতে শবে বরাতের নামাজ পড়তে মিরন ও তার বন্ধু আবির নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকার মদিনা মসজিদে যায়। সেখানে নামাজ থেকে বের হওয়ার পর মিরন ও আবিরের সঙ্গে পল্টু ও তার বন্ধু আমিনের বাকবিতণ্ডা হয়।
এ সময় উভয় গ্রুপের হাতাহাতির এক পর্যায়ে আবিরকে বাঁচাতে মিরন এগিয়ে গেলে আমিন ও পল্টু তাকে মারধরসহ ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মিরনকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
সোমবার দুপুরে মিরনের মরদেহের ময়নাতদন্তের পর বিকেলে নগরীর পূর্ব বাগিচাগাঁও এলাকার বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। পরিবারের সদস্য ছাড়াও সহপাঠীদের অনেককেই কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। মিরনের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না পরিবার ও সহপাঠীরা।
মিরনের মা নুসরাত জাহান জানান, আমার মিরন তার বাবার খুব আদরের সন্তান ছিল, প্রতিদিনই বাবার সঙ্গে সে ইমোতে কথা বলতো, রাতেই মোবাইলে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। ছেলের মুখ দেখতে আজ দুপুরেই বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের পথে রওয়ানা দিয়েছেন। তিনি দেশে আসার পরই গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হবে।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া পিপিএম জানান, নিহতের শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।
কামাল উদ্দিন/এমএএস/এমএস