ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৫ সে.মি. উপরে

প্রকাশিত: ০৮:০১ এএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

তিস্তার পানি টানা ৬৬ ঘণ্টা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা দুর্গত এলাকায় বসবাসরত ২৫ হাজার মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

গত বোরবার বিকাল ৬টা থেকে তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে দীর্ঘ সময় পানির স্তর থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ে তিস্তার পাড়ের পরিবারগুলো। বুধবার থেকে পানি কমতে শুরু করার আগে খড়িবাড়ীর গ্রামের সিডিএমপির মাটির বাঁধটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধটির ২০০মিটার তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। এলাকাবাসী বাঁশের পাইলিং ও বালুর বস্তা দিয়ে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করছে।

এদিকে, মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার, চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করেছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ১৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছে। মঙ্গলবার রাত ৯ টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বুধবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে।



বুধবার সকাল ৯ টা থেকে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টের পানি ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মর্মে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়। তিস্তার পাড়ের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির জন্য চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি টানা ৩দিন থেকে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ভোগান্তি কমেনি। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, পয়নিস্কাশন, শুকনো খাবারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

তিস্তার চরাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ির কাঁচা পায়খানা বন্যার তোড়ে ভেসে যায়। ত্রাণ সামগ্রীর অভাবে খাদ্য সংকটে পড়েছেন ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খালিশা চাপানী, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, ছাতুনামা, বাঘের চর, ঝাড়সিংহেশ্বরের নিম্নাঞ্চল এবং চরবাসী।

টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী গ্রামের সিডিএমপি মাটির বাঁধটির ২০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বাঁধটি জরুরি ভিত্তিতি মেরামত করতে না পারলে পূর্ব খড়িবাড়ী, দক্ষিণ খড়িবাড়ী ও গয়াবাড়ী গ্রামের সহস্রাধিক পরিবারে বন্যার পানি প্রবেশ করবে। টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধটি রক্ষায় কাজ করছে।



খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা গ্রামের মকবুল হোসেন (৪৮) জাগো নিউজকে জানায়, বোববার বিকেলে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। টানা ৩ দিনের বন্যায় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বাররা তাদের কোনো খোঁজ খবর নেয়নি।

ফজল আলীর স্ত্রী আজেদা বেগম (৪৮) জাগো নিউজকে বলেন, প্রবল বন্যার কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রান্না ঘরের চুলা পানিতে তলিয়ে আছে। নলকূপ পানির নিচে ডুবে রয়েছে।

একই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে আয়নাল (৪০) জাগো নিউজকে জানায়, তিস্তার প্রবল স্রোতের কারণে কাঁচা পায়খানাগুলো ভেসে গেছে। এলাকায় শুকনো খাবারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জাগো নিউজকে জানায়, পূর্ব খড়িবাড়ী গ্রামের সিডিএমপির মাটির বাঁধটি চরম হুমকিতে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে বাঁধটি পাইলিংসহ সিসি ব্লক না দিতে পারলে ৩টি গ্রাম তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে পড়বে।



ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জাগো নিউজকে জানায়, বন্যার ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডে ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, বুধবার সকাল ৬ টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ও সকাল ৯ টায় ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জাহেদুল ইসলাম/এসএস/এমএস