হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মারা গেল শিশু
নবজাতকের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বাগআচড়া থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন ইয়াকুব আলী। ভর্তি করেন হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। কিন্তু সেখানে অক্সিজেনের অভাবে মারা যাবে সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানটি, তা কে জানত?
মেয়েটিকে বাঁচাতে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে স্যালাইন হাতে ঝুলিয়ে ধরে রাখেন বাবা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যায় শিশুটি। অক্সিজেনের অভাব আর নার্সদের অবহেলায় কারণে বাঁচানো গেল না দুদিন বয়সী রাবেয়াকে।
শিশুটির বাবা ইয়াকুব আলী হাসপাতালে অক্সিজেন না থাকা ও নার্সদের অবহেলার অভিযোগ এনে জানান, বাগআচড়ার স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে বুধবার জন্ম হয় রাবেয়ার। এরপর সেখানকার ডাক্তারদের পরামর্শে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করান। সারাদিন সুস্থ ছিল মেয়েটি। রাত ৮টার দিকে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়। অক্সিজেন খুলে নিয়ে বাচ্চাকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়।
অক্সিজেনের অভাবে বাচ্চাটি অনেক কষ্ট পাচ্ছিল। নার্সকে বারবার ডেকে অক্সিজেন দেয়ার কথা বললেও দেয়া হয়নি। তিনি আরও জানান, এরপর অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে বাচ্চাটিকে খুলনায় নেয়ার প্রস্তুতির সময় দেখা যায়, মেয়েটি আর নেই।
‘নার্স একটু কথা শুনলে মেয়েটিকে হারাতে হতো না আমাদের’- বলেন হতভাগা এ বাবা।
দায়িত্বরত সেবিকা দিপা বলেন, বাচ্চাটির অবস্থা খুব খারাপ ছিল। সেজন্য জরুরিভাবে বাচ্চাটিকে খুলনায় নেয়ার পরামর্শ দিয়ে রেফার্ড করা হয়। সেই সঙ্গে অক্সিজেন খুলে নেয়া হয়। পরে বাচ্চাটি মারা গেছে। আমাদের দায়িত্বে কোন অবহেলা ছিল না।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শামসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বাচ্চাটি বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রি-ম্যাচিউরড ছিল। যশোরের বাগআচড়া থেকে অক্সিজেন ছাড়াই এখানে আসে। বাচ্চাটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে নিয়ে খুলনায় যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু হাসপাতাল ত্যাগের সময় অ্যাম্বুলেন্সে মারা যায়।
অক্সিজেন না দেয়া এবং নার্সের অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বাচ্চার অক্সিজেন না দেয়ার প্রশ্নই আসে না। অক্সিজেন কেন দেব না! কেউ চায় না অক্সিজেনের অভাবে কোনো বাচ্চা মারা যাক। বাচ্চাটির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সেজন্য তাকে রেফার্ড করা হয়।
‘কেউ মারা গেলে তাদের আপনজনরা না বুঝেই এমন অভিযোগ করেন’- যোগ করেন তিনি।
আকরামুল ইসলাম/এমএআর/এসডিএস/