দলবেঁধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, মূলহোতা গ্রেফতার
মাদারীপুরের শিবচরে এক স্কুলছাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে পারভেজ (২১) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক শওকত হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে আটক করে।
অভিযোগ উঠেছে, মামলার বাদী ও ভিকটিমকে আসামিরা প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। ঘটনার মূলহোতা পারভেজ পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও আরও দুই আসামি এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
দলবেঁধে ধর্ষণের পর গত ৯ এপ্রিল মেয়ের চাচা ইকবাল খালাসি বাদী হয়ে মামলা করেন।
মোবাইল ট্র্যাকিংসহ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পারভেজকে আটক করা হয়। তবে তার সহযোগী সাকিব শেখ ও সজিব মুন্সী এখনও পলাতক। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, দত্তপাড়ার স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার ছলেমান শিকদারের ছেলে পারভেজ শিকদারের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গত ১ এপ্রিল মেয়েটিকে স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে তিন বন্ধু জোরপূর্বক ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যায়। তারা উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের মগড়া পুকুরপাড় এলাকার রতন বিশ্বাসের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে তাকে আটকে রাখে এবং দলবেঁধে ধর্ষণ করে।
আটক পারভেজের দুই সহযোগী হলো- ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার ব্রাহ্মণমন পাড়া গ্রামের নিকা মুন্সীর ছেলে সজিব মুন্সী ও শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া মগড়া গ্রামের দাদন শেখের ছেলে সাকিব শেখ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আসামিরা ঘটনার সময় ধর্ষণের চিত্র মোবাইলে ধারণ করে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ভিডিও প্রকাশ করে। ওই ঘটনায় মেয়েটির বাবা মাদারীপুর আদালতের মাধ্যমে মামলা দায়ের করলে পারভেজ ও তার সহযোগীরা গাঁঢাকা দেয়।
পুলিশ দীর্ঘদিন মোবাইল ট্র্যাকিংসহ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পারভেজের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. শওকত হোসেন ও এসআই মাজেদ মন্ডলের নেতৃত্বে একটি দল ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে পারভেজকে গ্রেফতার করে।
ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীর ফুপা মনির হোসেন জানান, ঘটনার মূলহোতা পারভেজ পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও অপর দুই আসামি এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলার বাদী ও ভিকটিমকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. শওকত হোসেন বলেন, পলাতক অপর দুই আসামি সজিব ও সাকিবকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
অপরদিকে, মাদারীপুরের ডাসারে দুই কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণ মামলার অন্যতম দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যা মামলাসহ পৃথক মামলায় আরও দুই আসামিকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১২টায় মাদারীপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার।
তিনি জানান, গত ৩ এপ্রিল ডাসার থানার আটিপাড়া গ্রামে দুই কিশোরীকে দুই রাত আটকে দলবেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পাঁচ বন্ধু। ওই ঘটনায় ৫ এপ্রিল এক কিশোরীর বাবা ডাসার থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। পরে ঘটনার মূলহোতা নয়ন সরদার ও তার বন্ধু সাকিব হাওলাদারকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আটক করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা দলবেঁধে ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছে। অন্যদিকে, সদর উপজেলার ধুরাইল গ্রামের রুমা হত্যা মামলার মূলহোতা মিজানুর রহমানকে ঢাকার শেরে বাংলা নগর থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তার বিরুদ্ধেও হত্যা ও ধর্ষণ মামলা রয়েছে।
এ কে এম নাসিরুল হক/এমএআর/এমকেএইচ