ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পহেলা বৈশাখে চালু হয়নি ‘বনলতা এক্সপ্রেস’

নিজস্ব প্রতিবেদক | রাজশাহী | প্রকাশিত: ০৫:১৬ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০১৯

রাজশাহী-ঢাকা রুটের একমাত্র বিরতিহীন ট্রেন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ চালুর কথা ছিল রোববার (১৪ এপ্রিল)। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, রোববার দুপুর ১টা ১৫মিনিটে ঢাকা থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর কথা ছিল ট্রেনটির।

কিন্তু প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি। তবে আগামী ২০ এপ্রিলের পর যেকোনো দিন চালু হতে পারে এ ট্রেন। এরই মধ্যে ট্রেনের নামকরণ চূড়ান্ত হয়েছে। অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষের পথে। এখন কেবল যাত্রা শুরুর অপেক্ষা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি বলছে, রাজশাহী-ঢাকা বিরতিহীন ট্রেনটি নাম নির্ধারণ হয়েছে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। নববর্ষের দিন দুপুর ১টা ১৫মিনিটে ঢাকা থেকে ট্রেনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর কথা ছিল। কিছু প্রস্তুতি এখনো বাকি থাকায় সেটি সম্ভব হয়নি।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ এপ্রিল সকাল থেকে এ ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির কথা ছিল। সেটিও সম্ভব হয়নি। শেষ মুহূর্তে এসে প্রস্তুতির জন্য আরও কিছু সময় নেয়ায় এ বিলম্ব। তবে আগামী ২০ এপ্রিলের পর যেকোনো দিন ট্রেনটির উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।

banolata

দীর্ঘদিন ধরেই এ অঞ্চলের মানুষের দাবি ছিলো অন্তত, একজোড়া বিরতিহীন ট্রেন। এর মধ্যে একটি ট্রেন চালুর খবরে কৌতূহল এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়ে যায় এ অঞ্চলের মানুষের।

নতুন লাল-সবুজ ট্রেনের বগির ভেতরের ছবিগুলো নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করেছেন কেউ কেউ। যেন অপেক্ষার প্রহর আর কাটছে না। ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোতে নতুন ট্রেনের বগির সিট ক্যাপাসিটি ও বায়োটয়লেটসহ অত্যাধুনিক বিভিন্ন সুবিধার দৃশ্য দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

জানা গেছে, অত্যাধুনিক এ ট্রেনে যুক্ত হয়েছে নানা সুযোগ-সুবিধা। এই প্রথম দেশের আন্তঃনগর কোনো ট্রেনে যুক্ত হয়েছে উড়োজাহাজের মতো বায়ো-টয়লেট। এখন থেকে মলমূত্র আর রেললাইনের ওপরে পড়বে না। স্টেশনে দাঁড়ানো অবস্থায় টয়লেট ব্যবহার করতে পারবেন যাত্রীরা।

প্রথমবারের মতো ট্রেনটিতে যুক্ত হয়েছে রিক্লেনার চেয়ার। যেখানে পা এবং হেলান দেয়ার আরামদায়ক সুবিধা থাকছে। এসি বাথের কেবিনে বেডরেস্ট সুবিধা তো থাকছেই। যেখানে রাতে বিছিয়ে দিলেই ছোট খাটের মতো হয়ে যাবে। আর কেবিনে ওপরের সিটে ওঠার জন্য স্টিলের মইয়ের বাদলে থাকছে সিঁড়ি।

banolata

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সম্ভব্য নামের তালিকা থেকে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ নামটি শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হতে চলছে। নামটি ছিল সম্ভাব্য নামের তালিকার দ্বিতীয় নম্বরে। প্রধানমন্ত্রী এ নাম ঠিক করে দিয়েছেন। এছাড়া অন্য নামগুলোর মধ্যে ছিল ‘হিমসাগর এক্সপ্রেস’, ‘গ্রিনসিটি এক্সপ্রেস’ এবং ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’।

জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা অত্যাধুনিক ১২টি বগি সংযুক্ত হচ্ছে ‘বনলতা এক্সপ্রেসে’। এর মধ্যে শোভন চেয়ার সাতটি, এসি দুটি, একটি পাওয়ার কার, দুটি গার্ডব্রেক ও একটি খাওয়ার বগি। গত ৭ ও এপ্রিল পার্বতীপুর থেকে টাঙ্গাইল (বঙ্গবন্ধু সেতু) পর্যন্ত ট্রায়াল দিয়েছে ট্রেনটি।

এদিকে, ‘বনলতা এক্সপ্রেসে’ আসন সংখ্যা থকছে ৯২৮টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ারের ভাড়া হতে পারে ৩৭৫ টাকা। আর স্নিগ্ধার (এসি চেয়ার) ভাড়া হতে পারে ৭১৯ টাকা। এছাড়া ৮৬৩ টাকায় পাওয়া যেতে পারে এসি কেবিন আর ১ হাজার ২৮৮ টাকায় মিলতে পারে এসি বাথ।

banolata

বিরতিহীন চার্জ হিসেবে বিদ্যমান ভাড়ার সঙ্গে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে ভ্রমণকারীদের। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ে এ ভাড়া প্রস্তাব করেছে। যা অনুমোদন হতে পারে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার বাদে ট্রেনটি সপ্তাহে ছয়দিন চলবে। সিগন্যাল পাসিং দ্রুত শেষ হলে ঢাকা-রাজশাহী বিরতিহীন ট্রেনটির ভ্রমণ সময় হবে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা।

বিরতিহীন এ ট্রেন হবে দেশের সর্বাধুনিক হাইস্পিড কোচের ট্রেন। ঘণ্টায় এর গতি হবে ১৪০ কিলোমিটার; অর্থাৎ প্রতি মিনিটে পাড়ি দেবে আড়াই কিলোমিটার পথ। বিদ্যমান ট্রেনগুলোতে এখন ৩৪৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লাগে। এতে রাজশাহী-ঢাকা ট্রেন ভ্রমণে সময় বাঁচবে আড়াই ঘণ্টা।

প্রস্তাবিত সময়সূচি অনুযায়ী, ঢাকা থেকে ট্রেনটি বেলা ১টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে রাজশাহী পৌঁছাবে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায়। রাজশাহী থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে বেলা ১১টায়।

banolata

বর্তমানে রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচল করছে আন্তঃনগর পদ্মা, ধূমকেতু ও সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস। শুরুতে সীমিত স্টেশনে থামলেও এখন ১৪টি স্টেশনে থামছে ট্রেনগুলো। ফলে অনেকটা লোকাল ট্রেনের মতো অবস্থা এসব ট্রেনের। মাঝেমধ্যে লেগে যায় শিডিউল বিপর্যয়। এতে বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। ফলে নতুন বিরতিহীন ট্রেনের জন্য উন্মুখ এখানকার মানুষ।

রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম বলেন, প্রতিটি বগি বর্তমান ট্রেনের বগিগুলোর চেয়ে প্রশস্ত। ট্রেনের কারিগরি যন্ত্রাংশ অনেক উন্নতমানের। এখন থেকে যেসব ইঞ্জিন রেলওয়ে বহরে যুক্ত হচ্ছে, তা অত্যাধুনিক। তাই এটি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হয়ে আসছে রেলযাত্রীদের জন্য।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/জেআইএম

আরও পড়ুন