ছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা, শুরু হয়নি তদন্ত
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষার্থীকে (১৮) কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় তিনদিনেও কাজ শুরু করতে পারেনি জেলা প্রশাসনের গঠন করা তদন্ত কমিটি।
বুধবার তিন কার্যদিবস শেষ হলে পুনরায় মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিকেএম এনামুল করিম।
শনিবার (৬ এপ্রিল) মাদরাসার অভ্যন্তরের সাইক্লোন সেন্টারের তিনতলার ছাদে নিয়ে আলিম পরীক্ষার্থীর গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনার পরদিন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিকেএম এনামুল করিমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।
কমিটিতে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সলিম উল্লাহকে সদস্য করা হয়। কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান।
এদিকে, তিন কার্যদিবস শেষ হলেও কাজ শুরু করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। সর্বশেষ ১০ এপ্রিল বুধবার জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এনামুল করিম আরও সাতদিন সময় বাড়ানোর আবেদন করেন।
এ বিষয়ে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ বলেন, তদন্তের কাজ শুরু হয়নি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওই মাদরাসায় যাবেন মর্মে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। কাল থেকে পুরো দমে তদন্ত কার্যক্রম চলবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পিকেএম এনামুল করিম বলেন, আমরা জেলা প্রশাসকের বরাবর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও সাতদিন মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছি। এ সময়ে তদন্ত চলবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন, তদন্ত কমিটি সাতদিন মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলেও পাঁচদিন সময় বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবে।
৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান ওই ছাত্রী। ওই সময় তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে এক ছাত্রীর এমন সংবাদে ভবনের চারতলায় যান তিনি। সেখানে মুখোশ পরা ৪-৫ জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। এতে অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন অগ্নিদগ্ধ ছাত্রীর বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
এর আগে ২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেছেন।
রাশেদুল হাসান/এএম/পিআর