৮ বছর ধরে বিনা বেতনে গণিত পড়াচ্ছেন জাহাঙ্গীর
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুলফাডাঙ্গা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি পেশায় একজন কীটনাশক ব্যবসায়ী। পড়াশোনার প্রচুর ইচ্ছা থাকলেও ডিগ্রিতে ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্ন কারণে আর লেখাপড়া করেননি। টিউশনি আর কোচিং বাণিজ্যের এই যুগে টাকা ছাড়া শিক্ষা লাভ ভাবাই যায় না। তবে জাহাঙ্গীর আলম নিজ খরচে বাড়ির পাশে চাটাই দিয়ে একটা ঘর তৈরি করে সেখানে গত আট বছর ধরে বিনা বেতনে গণিতের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গ্রামের শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন।
২০১১ সাল থেকে শুরু করে বর্তমানে ৪৭ জন শিক্ষার্থীর নিয়মিত দুটি ব্যাচ পড়াচ্ছেন জাহাঙ্গীর আলম। প্রথম ব্যাচ ফজরের নামাজ শেষে শুরু করেন এবং দ্বিতীয় ব্যাচ মাগরিবের পর থেকে এশার আজান পর্যন্ত চলে। কুলফাডাঙ্গা ও পার্শ্ববর্তী মায়াধরপুর, তেঁতুলবাড়িয়া, ডাকাতিয়া গ্রামের অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গণিত শিক্ষা নিতে আসেন জাহাঙ্গীর আলমের কাছে।
ওই এলাকার অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলছেন, জাহাঙ্গীর আলম তার আদ-রুস প্রাইভেট সেন্টারে মা সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন কিছুদিন আগে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্তানের প্রতি অভিভাবকদের করণীয় আলোচনা করেন। যেমন নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাচ্ছে কি-না তা খেয়াাল রাখা, ক্লাসে পড়া হচ্ছে কি-না তা শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা। বাড়িতে সে ঠিকমত পড়াশোনা করছে কি-না সেদিকে খেয়াল রাখা ইত্যাদি। সত্যিই অসাধারণ একটা ভালো কাজ করছে জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমান কেউ বিনা পয়সায় পড়ায় সেটা ভাবাই যায় না।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অর্থের অভাবে কোনো শিক্ষার্থীর যেন পড়াশোনা বন্ধ না হয় এ জন্যই আমি ফ্রিতে পড়াচ্ছি। যারা টাকা নিয়ে পড়ান, তাদের কাছে যেন প্রকৃত দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটু মানবিকতার ব্যবস্থা থাকে। পারলে তারা যেন দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের টাকা ছাড়াই পড়ানোর ব্যবস্থা করেন।
চলতি বছরের জুন মাস থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদান করবেন বলেও তিনি জানান।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/আরএআর/জেআইএম