পাবনায় ৬শ চরমপন্থীর আত্মসমর্পণ
পাবনা স্টেডিয়ামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছে ১৫ জেলার প্রায় ৬শ চরমপন্থী। নিষিদ্ধ চরমপন্থী দলগুলো হলো, পূর্ব বাংলার কমমিউনিস্ট পার্টি (লাল পতাকা), পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি, নিউ বিপ্লবী কসিউনিস্ট পার্টি ও কাঁদামাটি।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় পাবনার শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনউদ্দিন স্টেডিয়ামে জেলা পুলিশ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ১৫ জেলার ৫৯৫ জন চরমপন্থী।
এর আগে ১৯৯৬ সালে যশোরে একবার চরমপন্থী দলের একটি অংশ আত্মসমর্পণ করেছিল। সর্বহারাদের আত্মসমর্পণের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিন পরে হলেও এতে এলাকায় স্বস্তি ফিরবে বলে আশা চরমপন্থীদের অত্যাচারের শিকার সাধারণ মানুষ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপি ও বাংলাদেশ পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে ৬৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬১৪টি দেশি অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন চরমপন্থী দলের সদস্যরা।
এদের মধ্যে পাবনা, নাটোর, বগুড়া, নওগাঁ, জয়পুরহাট, রাজশাহী, রংপুর, কুষ্টিয়া, নড়াইল, রাজবাড়ী, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার সক্রিয় বিভিন্ন চরমপন্থী দলের সদস্য রয়েছেন।
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে আব্দুল আলীম, বাবলু ব্যাপারী, ইকবাল শেখ, আব্দুর রাজ্জাক আর্ট বাবু, আতাউর রহমান মোবারক, মহসীন আলী, মহসিন মল্লিক, ফারুক হোসেন মোল্লা, আব্দুল্লাহ আল মুন, লিপু মোল্লা ও রমজান আলীকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ পুরস্কার হাতে তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, রাজশাহী আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হক, পাবনা-১ আসনের শামসুল হক টুকু, পাবনা-৪ আসনের শামসুর রহমান শরিফ ডিলু, পাবনা-সিরাজগঞ্জ মহিলা আসনের নাদিরা ইয়াসমিন জলি, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারী, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি খুরশিদ হোসেন, জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে দেশের বিভিন্নস্থানে জলদস্যূ, বনদস্যূ, জঙ্গি, মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করেছেন, এরই ধারাবাহিকতায় চরমপন্থীরাও আত্মসমর্পণ করছেন। দেশের উগ্রপন্থী বিপথগামীদের দেশে শান্তির জন্যে আমরা এই পন্থা অবলম্বন করেছি। তারা তো এদেশেরই মানুষ, এই রাষ্ট্রেরই মানুষ, পথচ্যুতদের সুযোগ দিতে হবে বলেই চরমপন্থীদের এই আত্মসমর্পণ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আত্মসমর্পণকারীদের অনেকের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, বিস্ফোরক ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। তারা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। আত্মসমর্পণকারীদের আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা হবে। অপরদিকে তাদের পুনর্বাসনের জন্যে সরকার ইতোমধ্যেই আর্থিক প্রণোদনাসহ সমিতির মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে।
আক্তার/আলাউদ্দিন আহমেদ/এমএএস/জেআইএম