নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে কী বলছেন বাংলাদেশি যুবক?
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের চিঠি পাওয়া বাংলাদেশি চিকিৎসক সাঈদ এনাম খুবই আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত। একান্ত আলাপে তিনি জাগো নিউজকে জানান, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার খবর যখন আমি ফেসবুকে দেখি, সত্যিকার অর্থে আমার কাছে অবিশ্বাস্য লেগেছে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমি একজন সাইকিয়াট্রিস্ট। স্বাভাবিকভাবেই আমি যে কোনো সমস্যা বা ঘটনার গভীরে যাবার চেষ্টা করি। অস্ট্রেলিয়ান সিনেটরের বিবৃতিটি আমি ফেসবুকে দেখি। আমি সেটা পড়ি। এমন একজন উচ্চমার্গীয় ব্যক্তির দু-একটা তীর্যক শব্দ ব্যবহার মানুষ হিসেবে আমাকে আহত করে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কিছু পদক্ষেপ আমাকে বেশ আশাব্যঞ্জক করে।’
‘একজন অমুসলিম হয়ে তিনি দল-মত-ধর্মের উপরে উঠে যে ভূমিকা রেখেছেন তাতে আমি তাকে সাধুবাদ দেবার প্রয়োজন মনে করি। এটা মানুষ হিসেবে আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য।’
সে দায়িত্ববোধ থেকেই আমি তাকে একটি মেইল করি এবং ধন্যবাদ দেই। আমি এও বলি, 'ইসলাম, মন্দির, মসজিদ, গির্জা, চার্চ বা প্যাগোডায় প্রার্থনারত কাউকে আঘাত করা সম্পূর্ণ নিষেধ, সে যেই হোক।'
তিনি (জাসিন্ডা) তার অফিসের মাধ্যমে আমার মেইলের জন্য ধন্যবাদ দেন, এবং তিনি এও বলেন, ‘সারা বিশ্বের মানুষ ও সোস্যাল মিডিয়া যেভাবে নিউজিল্যান্ডবাসীর এমন ক্রান্তিলগ্নে পাশে দাঁড়িয়েছেন, তিনি তাতে অভিভূত।’
‘আমি তার রিপ্লাই পেয়ে আনন্দিত হই, আমার মতো একজন ক্ষুদ্র ব্যক্তির মেইল তিনি পড়েছেন।’
উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের ভূমিকা, পদক্ষেপ এবং তার কিছু বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ২৩ মার্চ একটি চিঠি ই-মেইল করেন চিকিৎসক সাঈদ এনাম। এর পাঁচ দিন পর প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের পক্ষে তার কার্যালয়ের একান্ত সচিব ডায়না অকেবা এ চিঠির জবাব দিয়েছেন।
গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে গুলি চালান ব্রেন্টন ট্যারেন্ট নামে এক অস্ট্রেলীয়। এতে প্রাণ হারান ৪৯ জন। আহত হন ৪৮ জন। ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে মুসল্লিদের ওপর রাইফেল নিয়ে হামলা চালান ব্রেনটন। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখানকার মুসলমানদের সান্ত্বনা দেন প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। একই সঙ্গে এ ঘটনার পর কার্যকরী পদক্ষেপ ও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হন জাসিন্ডা আরডার্ন।
রিপদ দে/জেডএ