দ্বিতীয় সন্তানের মুখ দেখা হলো না লিটনের
অনাগত দ্বিতীয় সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারলেন না খুলনার তেরখাদা উপজেলার কোদলা গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান লিটন (৩৩)। আগামী ১০ এপ্রিল তার স্ত্রী তানিয়া বেগমের দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য দিন রয়েছে। কিন্তু তার ১৪ দিন আগেই বনানীতে এফআর টাওয়ারের আগুনে পুড়ে মারা গেলেন লিটন।
এতে শুধু অনাগত সন্তানই নয় লিটনের ৫ বছরের ছেলে তানিমও হলো পিতৃহীন। স্বামীহারা হয়ে অল্প বয়সেই বিধবা হলেন তার স্ত্রী তানিয়া।
শুক্রবার দুপুরে লিটনের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদায় এসে পৌঁছালে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। তার স্ত্রী স্বামী শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বাদ জুমা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লিটনের দাফন সম্পন্ন হয়।
তেরখাদার ছাগলাদাহ ইউপি চেয়ারম্যান দ্বীন ইসলাম বলেন, লিটনের মা-বাবা নেই। তার স্ত্রী আবার সন্তান সম্ভবা। এই পরিবারটির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন লিটন।
লিটনের ভাইয়ের ছেলে সুমন বলেন, বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর সেখান থেকে বের হতে পারেননি লিটন চাচা। তিনি ওই ভবনের একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে বনানীর এফআর টাওয়ারের নবম তলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট আগুন নেভানো ও হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করে। পাশাপাশি সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এবং পুলিশ, র্যাব, রেড ক্রিসেন্টসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৪ জনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আলমগীর হান্নান/আরএআর/এমকেএইচ