হিরো আলমের জামিন চাইলেন স্ত্রী, বিচারকের ভর্ৎসনা
বগুড়ায় কারাবান্দি আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের জামিন চাওয়ায় স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমি ও শ্বশুর সাইফুল ইসলামকে ভর্ৎসনা করেছেন আদালত।
সোমবার আপসনামা জমা দিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে হিরো আলমের জামিন চাইলে শুনানি শেষে জেলা ও দায়রা জজ নরেশ চন্দ্র সরকার তাদের ভর্ৎসনা ও জামিন নামঞ্জুর করেন।
একই সঙ্গে আগামী ১৮ এপ্রিল ধার্য তারিখে হিরো আলমকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তার উপস্থিতিতে জামিন শুনানি হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হিরো আলমের আইনজীবী মাসুদুর রহমান স্বপন বলেন, যৌতুক না পেয়ে নারী নির্যাতন মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম তার জামাতা হিরো আলমের বিরুদ্ধে মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। সমঝোতা হওয়ার পর এ ব্যাপারে আদালতে এফিডেভিট করেন তিনি। সোমবার সাইফুল ইসলাম, তার মেয়ে সাদিয়া আক্তার সুমি ও তার দুই সন্তান আদালতে আসেন। সাইফুল ইসলাম আপসনামার ভিত্তিতে হিরো আলমের জামিন প্রার্থনা করেন।
হিরো আলমের জামিন চেয়ে স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমি আদালতকে বলেন, ‘আমি হিরো আলমের সঙ্গে ঘর-সংসার করতে চাই। তাকে জামিন দেয়া হোক।’
এদিকে মামলার বাদী তার মেয়ে সুমিকে মারধর ও জামাই হিরো আলমের দ্বিতীয় বিয়ের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হন। তখন আদালত তাদের দুজনকে ভর্ৎসনা করেন। পরে হিরো আলমের জামিন নামঞ্জুর করে আগামী ১৮ এপ্রিল জামিন আবেদনের পূর্ণাঙ্গ শুনানির দিন ধার্য করেন বিচারক। একই দিনে হিরো আলমকে আদালতে হাজিরের পাশাপাশি তার স্ত্রী সুমি ও শ্বশুর সাইফুল ইসলামকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, যৌতুক না পেয়ে হিরো আলম গত ৫ মার্চ সন্ধ্যায় তার স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমিকে মারপিট করেন। শ্বশুর সাইফুল ইসলাম মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এছাড়া পরদিন সদর থানায় হিরো আলমের বিরুদ্ধে মামলা করলে তাকে থানায় ডেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
হিরো আলমকে ৭ মার্চ বগুড়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির কর হয়। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান স্বপন জামিন চাইলে শুনানি শেষে বিচারক আহম্মেদ শাহরিয়ার তারিক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ১১ মার্চ অ্যাডভোকেট একেএম সাইফুল ইসলাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হিরো আলমের অন্তর্ববর্তীকালীন জামিন প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু জেলা ও দায়রা জজ নরেশ চন্দ্র সরকার শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করেন।
স্ত্রী সাদিয়া আক্তার সুমি ওই সময় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, দুই মাস পর গত ৪ মার্চ রাতে হিরো আলম বগুড়া শহরতলির এরুলিয়া গ্রামের বাড়িতে আসেন। রাতে বিছানায় শুয়ে দীর্ঘসময় ঢাকায় এ নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এর প্রতিবাদ করলে হিরো আলম ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারপিট করেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, শুনেছেন হিরো ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এ কারণ তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের খোঁজ রাখেন না এবং সংসারের খরচ দেন না। এ প্রসঙ্গে কথা বললেই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
এরই প্রেক্ষিতে হিরো আলমকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দুই দফায় জামিন চেয়ে ব্যর্থ হন তার আইনজীবী। গত ৭ মার্চ জেলে যাওয়ার পর জনপ্রিয় এ অভিনেতাকে শুধু একদিন দেখতে গিয়েছিলেন তার বাবার বাড়ির লোকজন। স্ত্রী পক্ষের বা তার ভক্তরা একদিন খোঁজও নেননি তার। এরপরও তিনি স্বপ্ন দেখছেন, চলচ্চিত্র তৈরি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হওয়ার।
এএম/এমএস