ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

হাঁপানির ওষুধ নিতে গাজীপুরের দিকে ছুটছে মানুষ

জেলা প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ০১:৪২ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০১৫

গাজীপুরে হাঁপানি ও অ্যাজমা রোগীদের জন্য স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ নিতে গাজীপুর সদর উপজেলার আমুনা গ্রামের ফজলে মুন্সির বাড়িতে আসতে শুরু করেছে রোগী ও তাদের স্বজনরা। বৃষ্টি ও কর্দমাক্ত পথ অতিক্রম করে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন এ মহৌষধ নিতে।

রোববার বিকেলে মরহুম ফজলে মুন্সির বাড়িতে গিয়ে দেয়া যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীরা এসে জড়ো হয়েছেন। যেহেতু ওষুধটি খালি পেটে খেতে হবে তাই ভোরে ওষুধ নিয়ে অনেকে বাড়ি ফিরে যাবেন। একেকজন ৪/৫ জন রোগীর জন্য ওষুধ নিবেন। আর সেই প্রস্তুতি নিয়েই তারা এসেছেন।

Gazipur
এদিন বিকেলে বাড়ির ভেতরে বিপুল সংখ্যক নারীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।মাটির ঘরের বারান্দা ও উঠানে সাঁটানো সামিয়ানার নিচে অবস্থান নিয়েছে নারীরা।বাড়ির আশপাশে খালি জায়গা এবং বিভিন্ন মসজিদে পুরুষ রোগীরা অবস্থান নিয়েছেন।বাড়ির লোকজন শৃঙ্খলা মতো ওষধ বিতরণের জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ওষুধ বিতরণের লাইন।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা থেকে আসা মো. মহিউদ্দিন (৬৫) জাগো নিউজকে জানান, গত ৫-৬ বছর ধরে তিনি প্রতিবছর এ ওষুধটি খেয়ে আসছেন।তিনি অনেক আগেই সুস্থ হয়ে গেছেন।তারপরও প্রতিবছর তিনি ওষুধটি খেতে আসেন।

Gazipur
বরিশাল থেকে হারুন অর রশিদ এসেছেন প্রথমবার।প্রতিবেশির মাধ্যমে ঠিকানা নিয়ে তিনি এসেছেন হাঁপানি রোগের ওষুধ খেতে।ঢাকার কেরানীগঞ্জের মুজিবুর রহমান(৪০) এসেছেন একদিন আগেই শনিবার বিকেলে।ঢাকার দোহার থেকে মো. লাল মিয়া(৫৫) এসেছেন রোববার দুপুরে।তারা এবার প্রথম এসেছেন।অন্যরা এ ওষুধ খেয়ে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তিলাভ করায় তাদের কাছ থকে ঠিকানা নিয়ে এসেছেন গাজীপুরের আমুনা গ্রামে এ ওষুধ নিতে।

Gazipur
প্রতিবছর একবার মাত্র পাওয়া যায় এ ওষুধ।হাঁপানি ও অ্যাজমা থেকে চিরমুক্তি পেতে একাধারে তিন বছরে তিনবার এ ওষুধ খেতে হয় খালি পেটে।কিছু নিয়ম মেনে চললে সারাজীবনের জন্য হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমা থেকে মুক্তিলাভ হবে বলে জানিয়েছেন ওষুধ বিতরণকারীগণ।

Gazipur
জানা গেছে, প্রায় শত বছর আগে গাজীপুর সদর উপজেলা বাড়িয়া ইউনিয়নের আমুনা গ্রামের ফজলে মুন্সি স্বপ্নযোগে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমা রোগের এ ওষুধটি পান।এরপর তিনি এটি গ্রামের মানুষের মাঝে বিতরণ করতে থাকেন। রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ায় এ ওষুধের কথা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের গ্রামে।বর্তমানে এ ওষুধের কথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।প্রতিবছর ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে এটি বিতরণ করা হয়।লক্ষাধিক লোক প্রতিবছর ওষুধটি নিতে গাজীপুরের আমুনা গ্রামে এসে ভিড় করেন।এ বছর ৩১ আগস্ট সোমবার বাদ ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ওষুধটি বিতরণ করা হবে।

আমুনা গ্রামের ফজলে মুন্সির ইন্তেকালের পর নাতি সিরাজ মুন্সি ও আঃ মোতালেব উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে এটি বিতরণ করছেন।

Gazipur
আঃ মোতালেব জাগো নিউজকে জানান, দাদা ফজলে মুন্সি স্বপ্নযোগে ওষুধটি পেয়েছিলেন। তার দেখানো পথ অনুসরণ করে তার মৃত্যুর পর আমরা দুইভাই ওষুধটি বিতরণ করে আসছি।দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও ভারত থেকে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টের রোগীরা আসছেন ওষুধটি খেতে। অনেকে ভিড় এড়াতে দু’একদিন আগেই চলে আসেন গাজীপুরে।

তিনি জানান, টানা তিন বছরে তিনবার খালি পেটে ওষুধটি খেতে হয়।ওষুধটি খাবার পর হাঁস-মুরগির মাংস ও ডিম খাওয়া যাবে না তিন মাস, তেঁতুলের টক খাওয়া যাবেনা ৭ দিন আর সাগর কলা খাওয়া যাবে না সাড়ে চার বছর।এ নিয়মগুলো মেনে চললে আল্লাহর রহমতে শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি থেকে চিরমুক্তি পাওয়া যাবে।এ ওষুধটি বিতরণের সময় সামান্য হাদিয়া নেয়া হয়। কারণ এর কিছু উপকরণ বাজার থেকে কিনে আনতে হয়।

এমএএস/এমআরআই