পুকুরের পানিতে ১০ দিন ধরে জ্বলছে আগুন
নেত্রকোনা সদর উপজেলায় নলকূপ বসানোর সময় ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক গ্যাস বেরিয়ে আসার ঘটনা ঘটেছে। পানির বদলে নলকূপ থেকে বের হচ্ছে গ্যাস।
গত ১০ দিন ধরে সদর উপজেলার বড়ওয়ারি গ্রামে আইয়ুব আলীর বাড়িতে বসানো নলকূপের পাইপ দিয়ে এ গ্যাস বের হচ্ছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতা ওই বাড়িতে ভিড় জমান।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১০ মার্চ বড়ওয়ারি গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী পানি উত্তোলনের জন্য বসতঘরের পাশে একটি ২২৫ ফুট গভীর নলকূপ বসান। পাইপ বসানোর কাজ শেষ হলে পরেরদিন ভোরে আইয়ুব আলী দেখতে পান নলকূপের পাইপের গোড়ায় পানি বুদবুদ করে উপরে উঠছে। সেই সঙ্গে গ্যাসের গন্ধ পান তিনি। কৌতূহলবসত নলকূপের পাইপের গোড়ায় দেশলাই জ্বালালে আগুন জ্বলে ওঠে।
পরে বাড়ির লোকজন সঙ্গে সঙ্গে ভেজা বস্তা, মাটি ইত্যাদি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। কিছুক্ষণ পর ওই স্থান থেকে একটি সংযোগ পাইপ লাগিয়ে বাড়ির সামনের অগভীর পুকুরে নিয়ে যান। তাতে স্থানীয়রা আগুন ধরিয়ে দিলে গত ১০ দিন ধরে তা জ্বলতে থাকে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পুকুরের পানি সংলগ্ন একটি লোহার পাইপে দাউ দাউ করে আগন জ্বলছে। গত ১০ দিন ধরে ওই পুকুরে জ্বলছে আগুন। আগুন জ্বলার দৃশ্যটি দেখতে পুকুরের চার পাড়ে উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছেন।
কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, গৃহস্থালি কাজের জন্য বাড়িতে একটি নলকূপ বসাতে গিয়ে এই গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়ি থেকে বাড়ির সামনের পুকুরে পাইপ দিয়ে তা স্থানান্তর করেছি। কিন্তু যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে খুবই আতঙ্কে আছি আমরা। স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে খবর দিলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। গত সোমবার ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এসে দেখে গেছেন বিষয়টি। কোনো কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
স্থানীয় মেদনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জিল্লুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি শুনে পরিষদের সদস্যদের ওই বাড়িতে পাঠিয়েছি। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসসহ প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু এ নিয়ে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কেন তা আমার জানা নেই।
নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের ব্যবস্থা নেয়ার কথা নয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে তিতাস গ্যাসের লোকজন। তাদেরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
নেত্রকোনা তিতাস গ্যাস কার্যালয়ের টেকনিক্যাল কর্মকর্তা মো. আনোয়ার বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। কিন্তু এসব বিষয় নিয়ে পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের অনুসন্ধান দল কাজ করে। তাদেরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ নিয়ে পদক্ষেপ নেবে তারা।
এ বিষয়ে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি বৃহস্পতিবার দুপুরে বাপেক্সকে জানানো হয়েছে। একজন প্রকৌশলীকে নিয়ে বাপেক্সের অনুসন্ধান দল ঘটনাস্থলে যাবে। তারা অনুসন্ধান করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
কামাল হোসাইন/এএম/জেআইএম