ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

এ হাসি যেন থাকে

প্রকাশিত: ০৭:২৯ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৫

জয়পুরহাটের পরিবেশ রক্ষায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গৃহীত নানা কর্মসূচির সুফল পাচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষ। বিএমডিএ গৃহীত ফলজ ও বনজ বৃক্ষরোপণ, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বন্ধ হয়ে যাওয়া খাড়িসমূহ আধুনিক প্রযুক্তিতে পুনঃখনন ও এর উপর ক্রসড্যাম নির্মাণ করে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করায় জেলার সুবিধাভোগী হাজার হাজার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

জানা যায়, গত ২০১২-১৩ থেকে ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সদরের বন্ধ হয়ে যাওয়া ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কোদাল কাটা খাড়ির আট কিলোমিটার, কালাই-ক্ষেতলাল উপজেলার ১৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের হারামতি খাড়ির ১৫ কিলোমিটার, আক্কেলপুর উপজেলার রামশালা খাড়ির ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খননসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া ৬.৫ কিলোমিটার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে পুনঃখনন করে। এতে জেলার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর কৃষি জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসে এবং ১০ হাজারের বেশি চাষি এর সুফল ভোগ করছেন।
 
এছাড়া জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বন্ধ হয়ে যাওয়া ভদ্রাগঞ্জ, বেড়াখাই, শ্রী-খাল, হারাবতি, গঙ্গপ্রহল্লাদ, নুনগোলা এবং ক্ষেতলাল উপজেলার নন্দার কুচামারা ও বাশিয়াল খাড়িসহ প্রায় ৫০ কিলোমিটার খাড়ি পুনঃখননের অপেক্ষায় রয়েছে।

অন্যদিকে, কালাই-ক্ষেতলাল উপজেলার হারামতি খাড়ির উপর ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৭২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩টি ক্রসড্যাম ইন্টিক্রসড্যাম এবং ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ৪৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সদরের কোদালকাটা খাড়ির ডালিম্বা ও কাজিকর ব্রিজ সংলগ্ন একই খাড়ির অংশে দুটি ক্রসড্যাম নির্মাণে খরা মৌসুমে ৫-৬ ফুট উচ্চতায় বৃষ্টির পানি ধারণ নিশ্চিত করায় খরা মৌসুমে দুইপাশের আবাদি জমিতে সেচ সুবিধা নিশ্চিত হবে, সমৃদ্ধ হবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর এবং খাড়িতে বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় প্রজাতির মৎস্যে ভরপুর হয়ে উঠবে।



বিএমডিএ ২০১২-১৩ থেকে ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ লক্ষাধিক ফলজ-বনজ, ঔষধি গাছের চারা জেলার পুনঃখনন করা খাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় রোপণ করেছে যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অবদান রাখছে।

এদিকে পুনঃখননকৃত চাষিদের মধ্যে সদরের মঙ্গলবাড়ি এম.এম ডিগ্রি কলেজ নিকটস্থ জিতারপুর গ্রামের চাষি আসলাম হোসেন, আক্কেলপুরের কানুপুর গ্রামের চাষি শ্রী রঞ্জিত কুমার, ক্ষেতলালের হাটশহর গ্রামের খাদেমুল ইসলাম, কালাইয়ের বৈরাগির হাট গ্রামের আশরাফুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, ইতোমধ্যেই তারা এসব পুনঃখননকৃত খাড়ির মাধ্যমে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন এবং ব্যাপক হারে জলাবদ্ধতায় পানিতে ডুবে ফসলের ক্ষতি হয় না। বর্ষা মৌসুম কেটে গেলে এরপর খরা মৌসুমেও এসব খাড়ির দরুন তারা সম্পুরক সেচ সুবিধা পাবেন। ভূগর্ভস্থ পানির মাধ্যমে ডিপ ও স্যালো থেকে তাদের আর সেচ নিতে হবে না।

জয়পুরহাট সদরের মাধাই নগরের অনিল চন্দ্র সরকার, জিতারপুর গ্রামের মোজাফ্ফর রহমান, ক্ষেতলালের নিশ্চিন্তা গ্রামের আজিজুল ইসলাম, কালাই সদরের আবু হেলাল, আক্কেলপুরের আওয়ালগাড়ীর সেকেন্দার হোসেন জানান, সামাজিক বনায়ন নীতিমালায় তারা বিএমডিএর আদি-বর্গাচাষি হিসেবে সৃজিত বনের বিভিন্ন ফলজ-বনজ ও ঔষধি গাছ থেকে ফল-ফলান্তি এবং ওষুধ সংগ্রহে অর্থকারীভাবে উপকৃত হবেন।  

আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী বুলু ও সোনামুখী ইউপি চেয়ারম্যান সোলাইমান আলী সরকার জাগো নিউজকে বলেন, রামশালা পুনঃখননকৃত খাড়ির দরুন এবং এর দুপাশে, বিভিন্ন রাস্তায় ও আশ্রায়ন প্রকল্পে বৃক্ষ রোপণের সুফল ইতোমধ্যেই এলাকাবাসী ও চাষিরা পেতে শুরু করেছেন। এতে করে তাদের এলাকা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সমৃদ্ধ হয়েছে।

জয়পুরহাট বিএমডিএ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হারুন-অর-রশিদ জাগো নিউজকে জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর সমৃদ্ধ ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বন্ধ হয়ে যাওয়া খাড়িসমূহ ইতোমধ্যেই তারা পুনঃখনন করেছেন। আরও পুনঃখনন প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। ইতোমধ্যেই এসব খনন ও নির্মাণরি সুফল চাষিরা পেতে শুরু করেছেন। এছাড়া বিএমডিএ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ রোপণ করছে।  

এমজেড/এমএস