হয় গুলি করুন, না হয় বন্ধ করুন নির্বাচন : ইসি রফিকুল
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না। প্রয়োজনে গুলি চলবে, ভোটগ্রহণ বার বার বন্ধ হবে। কিন্তু অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ভৈরব উপজেলা নির্বাচন অফিসের আয়োজনে স্থানীয় সরকারি কে.বি. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
ইসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নই। আমরা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কাছে দায়বদ্ধ। বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ। তাই নিজের বিবেকের তাড়নায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের অংশীদার হোন।
তিনি আরও বলেন, ব্যালট যদি কেউ ছিনতাই করে আপনারা ঠেকানোর জন্য চেষ্টা করবেন। যদি ঠেকাতে না পারেন বন্ধ করেন নির্বাচন। ভোট চুরি ঠেকাতে না পারলে আমার নির্বাচন করার দরকার নাই। যদি নির্বাচন চলার সময়ে কেউ স্ট্যাম্পিং (জোর করে সিলমারা) করার চেষ্টা করে আমি কিন্তু আমার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিচ্ছি জাস্ট ওপেন ফায়ার। ফায়ার ওপেন করবেন। তারপরও যদি না পারেন কী দরকার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচন করার, জাস্ট স্টপ, বন্ধ করে দেন আপনার নির্বাচন।
ইসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আপনারাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রথম এবং প্রধান সোপান। আপনাদের স্বাক্ষর করা ভোটেরই গেজেট করি আমরা। সুতরাং আপনারা নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে ভোটগ্রহণ করবেন। ভোটকেন্দ্রে ভোটারের কী হলো, পার্সেন্টে ৩ না ৩০ হলো, সেটা দেখার বিষয় না। কারণ ভোটকেন্দ্রে ভোটার টেনে আনার দায়িত্ব আমাদের না। সেটা রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কাজ।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতি ইঙ্গিত করে ইসি রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন আমাদের গালিগালাজ করা হচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে বির্তক করা হচ্ছে। কিন্তু সেদিন তো তারা কেউ আমাদের কাছে নালিশ করেননি। এমন কি আপনারা যারা নির্বাচনী কাজে দায়িত্বরত ছিলেন, আপনারা এবং আমাদের সাংবাদিক বন্ধুরা, কেউই অভিযোগ তুলেননি। আজ কেন আমাদের দোষারোপ করছেন? আমরা তো যেসব জায়গায় অনিয়ম হয়েছে এমন অভিযোগে ২৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছিলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে আপনারা ভোটগ্রহণ করবেন। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি আপনাদের এবং ভোটকেন্দ্রের পাহারায় নিয়োজিত থাকবে। থাকবেন পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট। ভয়-ভীতিকে উপেক্ষা করে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন। আর কোনো অনিয়ম হলে সরাসরি আমাকে এবং পুলিশ সুপারকে মোবাইল ফোনে জানাবেন। আমাদের মোবাইল নাম্বার আপনাদের কাছে রেখে দেবেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- ময়মনসিংহ অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান, কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীন, ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ধীরেন চন্দ্র মহাপাত্র, ভৈরব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ও ভৈরব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান প্রমুখ।
দিনব্যাপী ওই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ৮৬ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৫৭০ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ১৪০ জন পোলিং অফিসার অংশগ্রহণ করেন।
এএম/পিআর