স্ত্রী তাস খেলতে নিষেধ করায় স্বামীর ভয়ানক কাণ্ড
রাতে স্বামী আমানউল্লাহ (২৬) তাস খেলছিলেন তার সঙ্গীদের সঙ্গে। তাস খেলায় বাধা দেন স্ত্রী সোনিয়া খাতুন (২১)। রাত ১০টার দিকে স্ত্রীর বাধা উপেক্ষা করে তাস খেলতে থাকেন আমানউল্লাহ। পরে সোনিয়া ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১২টার দিকে ঘুমন্ত স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন পাষণ্ড স্বামী। সেই আগুনে গুরুতর দগ্ধ সোনিয়া বর্তমানে সাতক্ষীরার তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
দগ্ধ সোনিয়া খাতুনের বাবা তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের আমিনুর শেখ বলেন, আট মাস আগে খুলনার পাইকগাছা সদরের মোহর গাজীর ছেলে আমানউল্লাহ্ গাজীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে সোনিয়ার বিয়ে হয়। এক মাস আগে সোনিয়াকে নিয়ে আমানউল্লাহ্ যশোর জেলার চৌগাছা থানার ঐশী মল্লিক ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতে যায়। সেখানে নিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় ৫ মার্চ (মঙ্গলবার) রাতে আমার মেয়ের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। ওই রাতেই ইটভাটার অন্য শ্রমিকরা সোনিয়াকে চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে সেখান থেকে তালা হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ সোনিয়া খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, স্বামী আমানউল্লাহ ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন। এক মাস আগে আমাকেও সেখানে নিয়ে যান। গত মঙ্গলবার রাতে অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে তাস খেলছিলেন তিনি। আমি তাস খেলতে নিষেধ করি। কিন্তু তিনি শোনেননি। পরে আমি ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এরপর তিনি মধ্যরাতে আমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত আমানউল্লাহ্ ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের ব্যবহৃত ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাজীব সরদার জানান, সোনিয়ার শরীরের পিঠ, হাত ও বুকের স্পর্শ কাতর অংশ মারাত্মকভাবে পুড়ে ক্ষত হয়েছে। দরিদ্র পরিবার হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে এখানেই সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
এ বিষয়ে যশোরের চৌগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজীব জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর/এমকেএইচ