ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

৬ লাখ টাকা না দেয়ায় হাবিবকে করা হয় ৭ টুকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | খুলনা | প্রকাশিত: ০৭:৩০ পিএম, ০৮ মার্চ ২০১৯

খুলনায় মাথা-হাত-পা বিচ্ছিন্ন অজ্ঞাত যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে শুক্রবার দুপুরে অজ্ঞাত ওই যুবকের পরিচয় উদ্ধার করে। তিনি সাতক্ষীরা জেলা সদরের উমরা পাড়ার আব্দুল হামিদের ছেলে হাবিবুর রহমান (২৬)।

হত্যা করার আগে তার পিতার কাছে মুক্তিপণ বাবদ ৬ লাখ টাকা দাবি করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত ৫ মার্চ খুলনায় আসেন হাবিবুর রহমান।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘খণ্ডিত আকারে উদ্ধার হওয়া দেহের অজ্ঞাত ব্যক্তির নাম হাবিবুর রহমান (২৬)। তিনি সাতক্ষীরা সদরের উমরা পাড়ার আব্দুল হামিদের ছেলে। তিনি ইটভাটায় শ্রমিক প্রদানের ঠিকাদারি সরদার হিসেবে কাজ করতেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। নিহত হাবিবুরের পরিবারকে খবর দেয়া হলে তারা এসে শনাক্ত করেন।’ এ ঘটনায় মামলা দিলে মামলা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

পুলিশ কমিশনার জানান, কে বা কারা যুবককে হত্যার পর মরদেহটি ফেলে যান। পুলিশের অপরাধ তদন্ত শাখা (সিআইডি), খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা এবং গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে ।

পিতা আব্দুল হামিদ সরদারের বরাত দিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বেড়ানোর কথা বলে নিজের মোটরসাইকেলে খুলনায় গিয়েছিলেন সাতক্ষীরার হাবিবুর রহমান সবুজ (২৬)। তিনদিন পর তার বস্তাবন্দী খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে সবুজের ফোন থেকে তাদের বাড়িতে একটি কল আসে। ফোনের ওই প্রান্ত থেকে বলা হয় ‘সবুজকে আমরা বেঁধে রেখেছি। ছয় লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে’।

তিনি আরও জানান, পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। সবুজের মরদেহ নিতে খুলনায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

নিহতের পিতা আব্দুল হামিদ সরদার জানান, সবুজ ঢাকায় লেখাপড়া করে। কয়েকদিন আগে ক্যানসার আক্রান্ত মা জাহানারা খাতুনকে দেখতে বাড়ি এসেছিল সে। মঙ্গলবার সকালে তার মাকে জানিয়ে নিজের মোটরসাইকেলে খুলনায় যায়। পরদিন ফিরে আসার কথাও বলেছিল সে। বৃহস্পতিবার তার খোঁজ জানতে খুলনায় ফোন করা হলে সাদি নামের এক ব্যক্তি ফোনটি রিসিভ করে জানায় ‘সবুজ মোস্তফা মামার সাথে যশোর গেছে’। এরপর থেকে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফিরে না আসায় তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করেন (জিডি নম্বর ২৯৩)।

তিনি আরও জানান, তার ছেলের খুলনায় ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়। এই মামলায় কিছুদিন আগে তার জেল হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, ব্যবসার টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে তাকে খুলনায় কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহানগরীর শেরেবাংলা রোডের বলাকা ক্লাবের বিপরীতে ড্রেনের পাশ থেকে পলিথিন মোড়ানো অবস্থায় অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহের একটি বড় অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে মাথা, দুই পা ও দুই হাত ছিল না। পরে দুপুরে ফারাজিপাড়ায় সমাজসেবা অফিস-সংলগ্ন ড্রেন থেকে আরও দুটি ব্যাগে থাকা মাথাসহ অন্যান্য অংশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নগরজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা খুলনায় ঘটেনি।

আলমগীর হান্নান/এসআর/এমকেএইচ

আরও পড়ুন