প্রেমিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা স্ত্রী, অতঃপর...
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গলাকাটা অবস্থায় উদ্ধার যুবকের পরিচয় মিলেছে। খুন হওয়া যুবকের নাম আমিনুল ইসলাম কালু (২৫)। তিনি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এনায়েত নগর এলাকার আজমত মিয়া ওরফে নাটাই মিয়ার ছেলে। কালু স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার রাতে নিহতের ভাই সামসুল হক মরদেহ শনাক্ত করেন। পরিচয় পাওয়ার পর রাতে স্ত্রী রিক্তা বেগম ও তার প্রেমিক রেজাউল করিম ওরফে পলাশকে গ্রেফতার করে পরকীয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।
পরে কালুর স্ত্রী ও প্রেমিককে গ্রেফতারের পর রোববার বিকেলে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আক্তারের আদালতে পাঠানো হয়। আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া আরও ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আলমগীর হোসেন জানান, উপজেলার কাফুরদি গ্রামের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর খেকে উদ্ধার হওয়ার যুবক আমিনুল ইসলাম কালু স্ত্রী রিক্তা বেগমের পরকীয়ার বলি। শনিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্ত্রী রিক্তা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক রেজাউল করিম ওরফে পলাশকে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পরিষ্কার হয়।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আমিনুল ইসলাম কালুর স্ত্রী রিক্তা বেগম তার বাড়িতে রান্না করে ব্যাচেলরদের মেসে খাবার সরবরাহ করতো। এতে করে বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে রিক্তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শেরপুরে সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউল করিম পলাশের সঙ্গে রিক্তার পরকীয়া ও দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি রিক্তার স্বামী হাতেনাতে ধরে ফেলে।
এসব নিয়ে কালুর সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে শুক্রবার রাতে রেজাউল করিম পলাশ ও তার সহযোগীরা কালুকে অপহরণ করে সোনারগাঁয়ের কাইকারটেক কাফুরদী এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করে মরদেহ ফেলে যায়। পরে শনিবার সকালে এলাকাবাসী সেটা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
অপরদিকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধারের খবর শুনে নিহত কালুর ভাই সামসুল হক নারায়ণগঞ্জ জেলা হাসপাতালে গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন এবং সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, আমিনুল ইসলাম কালু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জর করেছেন। এছাড়া আরও ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
শাহাদাত হোসেন/এফএ/এমকেএইচ