পলাশকে প্রতারক হিসেবে চিনতো এলাকাবাসী : পুলিশ সুপার
বিমান ছিনতাই চেষ্টায় নিহত পলাশ আহমদের বিরুদ্ধে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, যেহেতু তার (পলাশ) বাবা-চাচারা দেশের বাইরে থাকেন, তাই তার খোঁজ নেয়ার মতো তেমন কেউ ছিল না। এলাকার সহজ-সরল লোকদের বিদেশ পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে সে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ এসব কথা বলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, চট্টগ্রাম বিমান বন্দর থেকে বিমান ছিনতাই চেষ্টার মূল হোতা পলাশ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি। আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সে মাদরাসার ছাত্র ছিল। দাখিল পাস করার পরেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে থাকে। তার বাবা মায়ের কাছ থেকে জানা যায়, বিভিন্ন চলচ্চিত্র টিমের সঙ্গে কাজ করতো বলে জানায় পলাশ। ঘটনার আগে গত শুক্রবার দুবাই যাওয়ার কথা বলে বাসা ছাড়ে সে। পরবর্তীতে পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীরা ব্যাপারটি জানালে পরিবার তাদের ছেলের ব্যাপারে নিশ্চিত হন।
তিনি আরও জানান, পলাশের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই তবে জানতে পেরেছি অতীতে নারীঘটিত একটি মামলা ছিল তার বিরুদ্ধে। এলাকার লোকজনের সঙ্গে সে তেমন মিশতো না। এছাড়া বেশ কয়েক বছর আগে দুবাইয়ে লোক পাঠানোর কথা বলে পলাশ প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাই তারা তাকে প্রতারক হিসেবে চিনতো।
পলাশের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে পুলিশ সুপার জানান, পলাশের পরিবার জানিয়েছে তাদের বাসায় দুইবার অভিনেত্রী সিমলা এসেছিল এবং তারা বিবাহিত বলেও দাবি করা হয়। এ ছাড়া তার অন্য কোনো বিষয় জানতো না পরিবার। পলাশ মূলত পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতো সব সময়।
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের ভূমিকা কি হবে- জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা আপাতত তথ্য নিশ্চিতের কাজ করেছি। র্যাব থেকে তাকে আসামি দাবি করা হলেও আমরা সেই তথ্য পাইনি, তবে র্যাবের দাবিকে ভুল বলছি না। সে আসামি হতেও পারে। মামলা নারায়ণগঞ্জ হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই আমরা ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলতে পারবো না। তবে যদি তদন্তের স্বার্থে আমাদের দায়িত্ব দেয়া হয় তখন বিস্তারিত আরও জানার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’র ফ্লাইটটি (বিজি-১৪৭) ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাই চেষ্টার অবসান হয়। কমান্ডো অভিযানে বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী যুবক পলাশ নিহত হন। তিনি বিমানের ক্রুদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বারবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।
শাহাদাত/আরএআর/এমকেএইচ