কিশোরকে বিয়ের দাবিতে অনশনে ৩৫ বছরের নারী
পঞ্চগড়ে ১৭ বছর বয়সী কিশোর বাবুকে বিয়ের দাবিতে গত তিনদিন ধরে অনশন করছেন ৩৫ বছর বয়সী এক নারী। ছেলেকে ফাঁসাতে ওই নারী এই কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই কিশোরের বাবা জয়নুল ইসলাম।
শনিবার দুপুরে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ঘটনাটি সালিশের নামে স্থানীয় তিন ইইপি সদস্য মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ঘটনার পর থেকে বাবু পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ঘটনায় কিশোর বাবুর আত্মীয়-স্বজনসহ পরিবারের লোকজন অস্বস্তিতে পড়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদর উপজেলার অমরখানা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদীঘি ইউনিয়নের ফুলপাড়া গ্রামের জয়নুল ইসলামের ছেলে মো. বাবু (১৭) পাশের সদর ইউনিয়নের ডুডুমারী গ্রামে জমি চুক্তিতে নিয়ে উন্নত জাতের টমেটো আবাদ করে। এই সুযোগে ওই গ্রামের ফজিরত আলীর মেয়ে রেহেনা বেগম (৩৫) বাবুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জমিতে কাজ করা শ্রমিকদের টাকা দেয়ার সময় অজ্ঞাত কয়েকজন যুবককে দিয়ে রেহেনা বাবুকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় বাবুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে।
পরে স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। বৈঠকে রেহেনা বেগমকে ৫০ হাজার টাকা প্রদানের শর্তে বিষয়টি আপস নিষ্পত্তি করা হয়। কিন্তু বৈঠক শেষে রেহেনা বেগমকে কোনো টাকা না দিয়ে তিন ইউপি সদস্য সমুদয় টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। তাদের পরামর্শে অতিরিক্ত সুবিধা লাভের আশায় পর দিন আবারও রেহেনা বেগমকে ওই কিশোরের বাড়িতে পাঠানো হয়।
অমরখানা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু বলেন, সদর ইউপির তিনজন সদস্যের সহযোগিতায় বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। কিন্তু ওই নারীকে কোনো টাকা না দিয়ে ওই তিন ইউপি সদস্য ৫০ হাজার টাকা ভাগ করে নেন। অতিরিক্ত টাকার আশায় বর্তমানে ওই নারী বাবুর বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানোর পরও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এসব বিষয়ে আইনের আশ্রয় না পেলে অসহায় মানুষগুলো কোথায় যাবে।
পঞ্চগড় সদর ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ওই নারীর কথামত দুই বছর ধরে বাবুর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। বিয়ে করার জন্য বাবু ওই নারীর কাছ থেকে কিছু টাকাও নিয়েছিল। বিষয়টি সদর থানার ওসিকে জানালে তিনি মীমাংসার পরামর্শ দেন। পরে মীমাংসার মাধ্যমে ছেলেটিকে তার বাবার হাতে তুলে দেয়া হয়। এরপর কি হয়েছে আমরা জানি।
পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আক্কাস আহমেদ বলেন, এ নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা নেয়া হবে।
সফিকুল আলম/আরএআর/জেআইএম