সেই ৩১ নবজাতকের মরদেহের ঠাঁই হলো গোরস্থানে
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হওয়া ৩১ নবজাতকের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে গোরস্থানে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে আঞ্জুমান-ই হেমায়েত-ই-ইসলামের সহায়তায় মরদেহগুলো নগরীর গোরস্থান রোডের মুসলিম গোরস্থানে মাটিচাপা দেয়া হয়।
এর আগে দুপুরে পুলিশের তত্ত্বাবধানে গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আকবর হোসেনের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের চার সদস্যের একটি দল ৩১ নবজাতকের মরদেহ ময়নাতদন্ত করেন। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে বিকেল ৫টার দিকে পুলিশের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা মরদেহগুলো মুসলিম গোরস্থানে মাটি চাপা দেয়।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইদুল জানান, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল ৫টার দিকে। এরপর পুলিশের তত্ত্বাবধানে মরদেহগুলো মুসলিম গোরস্থানে মাটি চাপা দেয়া হয়।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালে জন্ম নেয়া অপরিণত শিশুর মরদেহ কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য মেডিসিনের মাধ্যমে বোতলে ভরে রাখা হয়। ১৫/২০ বছর পূর্বে অপরিণত এসব শিশুর মরদেহ সংরক্ষণ করা হয়। ওই বোতলগুলো গাইনি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত ছিল। তাছাড়া বোতলে থাকা মেডিসিনের মেয়াদও শেষপর্যায়ে থাকায় তা মাটিচাপা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ওয়ার্ড বয়রা কোনো কিছু না বলে হাসপাতালের পেছনে ডাস্টবিনে স্তূপ করে ফেলে রাখে।
পরবর্তীতে টোকাইরা সেখান থেকে অপরিণত শিশুর মরদেহ ও বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করে নিয়ে যায়। সোমবার রাত ৮টার দিকে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের লোকজন হাসপাতালের ময়লা অপসারণ করতে গেলে জরুরি বিভাগ সংলগ্ন পানির ট্যাঙ্কের নিচ থেকে অপরিণত শিশু এবং মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পায়।
এ ঘটনা জানতে পেরে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর দায়িত্বে অবহেলার কারণে গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. খুরশিদ জাহান এবং ওই বিভাগের ওয়ার্ড ইনচার্জ নার্স জোৎস্না বেগমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়াও এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সাইফ আমীন/আরএআর/জেআইএম