ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ছিলেন কলেজছাত্র, বাবার খুনের বদলা নিতে হলেন দুর্ধর্ষ

জেলা প্রতিনিধি | মুন্সিগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৭:৫৬ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ছিলেন মেধাবী ছাত্র। ছাত্র থেকে হয়ে উঠেন ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তার নামে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা হয় থানায়। হয়ে যান দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। এরই মধ্যে রোববার পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন হুমায়ুন বেপারী (৩০)।

রোববার মুন্সিগঞ্জ সদরের মহাকালী ইউনিয়নের তালেশ্বর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হুমায়ুন বেপারী নিহত হন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ম্যাগাজিনসহ একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, বাবা আর মামার খুনের প্রতিশোধ নিতে ডাকাত দলের সদস্যদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন হুমায়ুন। জড়িয়ে পড়েন অপরাধ জগতে। মেধাবী ছাত্র থেকে হয়ে উঠেন সক্রিয় ডাকাত সদস্য।

২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন হুমায়ুনের বাবা মোহন বেপারী ও মামা ফয়েজ মিজি। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নাড়া দেয় সর্বস্তরে।

হুমায়ুন যখন নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজে অনার্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন তখন তার বাবা আর মামা খুন হন। জোড়া খুনের ঘটনা মেনে নিতে পারেননি হুমায়ুন। বাবা ও মামার হত্যার প্রতিশোধ নিতে অপরাধ জগতে পা বাড়ান তিনি। হয়ে উঠেন দুর্ধর্ষ ডাকাত। একে একে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়ান হুমায়ুন। মেঘনা নদীসহ আশপাশের জেলায় চলতো তার সঙ্গীদের অপরাধ কার্যক্রম। একপর্যায়ে হয়ে যান দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে রোববার হুমায়ুনের মরদেহ নিতে এসে এসব বিষয় জানালেন খালা লাকি আক্তার। বলেন, মূলত বাবা ও মামার হত্যার প্রতিশোধ নিতে অপরাধ জগতে পা বাড়ায় হুমায়ুন।

পুলিশ জানায়, হুমায়ুনের বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার কয়েকটি থানায় ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদকসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। তাকে ধরতে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ।

রোববার সদরের মহাকালী ইউনিয়নের তালেশ্বর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হুমায়ুন বেপারী নিহত হন। এ সময় পুলিশের দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ হন।

ঘটনাস্থল থেকে ম্যাগাজিনসহ একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, এক রাউন্ড গুলির খোসা, দুটি ক্রিজ, দুটি ধারালো চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জ সদর ও চাঁদপুরের উত্তর মতলব থানায় ছয়টি অস্ত্র ও ডাকাতি মামলা রয়েছে।

ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। নিহত হুমায়ুনকে নিজ গ্রামের কালিচরে দাফন করা হয় বলে পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি মুন্সিগঞ্জ শহরের মুক্তারপুর এলাকা থেকে ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার আসামি হুমায়ুন বেপারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর থেকে জিজ্ঞাসাবাদে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করে আসছিল হুমায়ুন।

তিনি আরও বলেন, শনিবার রাতে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হুমায়ুনকে সঙ্গে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য সদরের তালেশ্বর এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হুমায়ুনের সহযোগীরা গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় পাল্টা গুলি ছুড়ে পুলিশ। একপর্যায়ে হুমায়ুন পুলিশের গাড়ি থেকে লাফিয়ে নেমে পালাতে চেষ্টা করে।

এ সময় পুলিশের দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়। পরে সহযোগীরা পালিয়ে গেলে হুমায়ুনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। গুলিবিদ্ধ হুমায়ুন বেপারীকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ভবতোষ চৌধুরী নুপুর/এএম/জেআইএম

আরও পড়ুন