এমন শিলাবৃষ্টি আগে কখনও দেখেনি রাজশাহীর মানুষ
রোববার ভোরে রাজশাহীর পুঠিয়ায় রের্কড শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আধাঘণ্টার শিলাবৃষ্টিতে ঢেকে গেছে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। এমন শিলাবৃষ্টি এর আগে কখনো দেখেনি ওই এলাকার লোকজন।
শিলাবৃষ্টিতে আমের মুকুল, বিভিন্ন সবজি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি দফতর। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিও শুরু করেছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা।
রাজশাহী আবহাওয়া দফতর বলছে, এই শিলাবৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবেই। তবে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ থেকে।
রাজশাহী আবহাওয়া দফতরের পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ভোর ৪টা ৪০ মিনিট থেকে ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৭ মিলিমিটার। শেষ মিনিট দশেকের মধ্যে দমকা হওয়ার সঙ্গে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুঠিয়ার বানেশ্বর, ভালুকগাছি ও জিউপাড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে দমকা হাওয়ার সঙ্গে ব্যাপক শিলা-বৃষ্টি শুরু হয়। শিলাবৃষ্টিতে এই তিন ইউনিয়নে কয়েকশ বাড়ি এবং তিনটি বিদ্যালয়ের টিনের চালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝরে গেছে আম ও লিচুর মুকুল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন ও আলুসহ বিভিন্ন চৈতালী ফসল। রাস্তা-ঘাট এমনকি বাড়ির আঙিনায় জমেছে শিলাস্তূপ।
রাজশাহী জেলা পরিষদের সদস্য আবুল ফজল বলেন, ভোর ৫টা থেকে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় আধা ঘণ্টায় শিলার আঘাত বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন ফসল তছনছ করে দিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি পুঠিয়া-দুর্গাপুর সাংসদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলার মধুখালি এলাকার কৃষক তাহের আলী বলেন, শিলার আঘাতে আমার দু’টি টিনসেড ঘরসহ দু’বিঘা জমির পেঁয়াজ, এক বিঘা রসুনখেত শেষ হয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় তিন লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার আমচাষি আবেদ আলী বলেন, আমার ৫৫ বছর বয়সে এমন শিলা-বৃষ্টি কখনও দেখিনি। এ বছর আম বাগানগুলোতে আগাম মুকুল দেখা দিয়েছিল। এতে এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করেছিলাম। কিন্তু আমের পাশাপাশি প্রায় সকল ফুল ও ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সালাউদ্দীন আল ওয়াদুদ বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন জানানো সম্ভব নয়। সকাল থেকে আমাদের লোকজন মাঠে কাজ করছে। আশা করা যাচ্ছে আগামীকালের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মন্জুরে মাওলা বলেন, বর্তমান সাংসদসহ উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তারা শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রয়েছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে কিছুটা সময় লাগবে।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/এমএস