ফান্ডের লাখ টাকা গেল প্রধান শিক্ষকের পান-সিগারেটে
প্রধান শিক্ষক গত এক বছরে বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে নিজের পান-সিগারেটের পেছনে ব্যয় করেছেন ৯৩ হাজার ২৫ টাকা। কিন্তু শিক্ষা উপকরণের পেছনে ব্যয় করেছেন মাত্র ৭৯০ টাকা।
মাগুরার মহম্মদপুর আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউট সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তদন্তে চমকপ্রদ এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
জানা গেছে, ২০১৭ সনের ২৪ আগস্ট মহম্মদপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত এ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি বিদ্যালয়টির অ্যাকাউন্ট পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হতে হবে। কিন্তু সরকারি ঘোষণার পরও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম নাসিরুল ইসলাম একক নামে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে আসছিলেন।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র হাতে পেয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফুর রহমান পরিদর্শনে গিয়ে বিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম দেখতে পান। পদাধিকার বলে সভাপতি হিসেবে বিদ্যালয়টির আয়-ব্যায় সংক্রান্ত নথিপথ সংগ্রহের পর অনিয়মের নানা বিষয় তার চোখে পড়ে।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউট বিদ্যালয়টি মহম্মদপুর উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার মানও অনেক ভালো। বিদ্যালয়ের একাধিক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কিন্তু মাত্র একটি অ্যাকাউন্ট যাচাই-বাছাইকালে দেখা যায়, গত এক বছরে প্রধান শিক্ষক একেএম নাসিরুল ইসলাম ওই বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী নজরুল ইসলাম লাল মিয়ার দোকান থেকে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৭ টাকার মালামাল খরিদ করেছেন, যা স্কুল ফান্ড থেকে মেটানো হয়েছে।
খরিদকৃত ওই সব মালামালের মধ্যে তিনি ৭২ হাজার ২০ টাকার সিগারেট, ২১ হাজার ৫ টাকার পান পাতা এবং ১ হাজার ৪৮২ টাকার বিস্কিট ক্রয় করেছেন। অথচ উপজেলার নামি এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে খাতা কেনা বাবদ মাত্র ৩৬০ টাকা এবং কলমের জন্য ৪৩০ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম নাসিরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বন্ধ থাকায় তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ের সব অ্যাকাউন্ট এখনও যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়নি। তবে বিদ্যালয় ফান্ডের মোটা অংকের টাকা তিনি (প্রধান শিক্ষক) নিজের ধূমপানের পেছনে ব্যয় করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাকি অ্যাকাউন্টগুলোর তথ্য যাচাই শেষ হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরাফাত হোসেন/এফএ/এমএস