কষ্ট পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কম যেতেন আল মাহমুদ
মনে কষ্ট থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাতায়াত কমিয়ে দিয়েছিলেন ‘সোনালী কাবিন’র কবি আল মাহমুদ। বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করা এই কবির পৈত্রিক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মৌড়াইল এলাকায়। শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টা ৫ মিনিটে ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই মৌড়াইল মহল্লার মোল্লাবাড়িতে জন্ম নেয়া আল মাহমুদ দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ছিলেন সবার বড়। পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকার কারণে মাঝে-মধ্যে অল্প সময়ের জন্য পৈত্রিক নিবাসে আসতেন তিনি। তবে বছর খানেক আগে থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসা-যাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলেন।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে কবি আল মাহমুদের ভাতিজা মীর রব্বান হোসেন বলেন, কাকা মাঝে-মাঝে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এলেও নিজ পৈতৃক ভিটাতে থাকেননি প্রায় এক যুগের বেশি সময়। আর অসুস্থতাজনিত কারণে গত এক বছর যাবত তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসেননি।
তিনি বলেন, নিজ বাড়িতে যখন আসতেন তখন তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড় লেগে থাকত। তাদের সঙ্গে গল্প করে অনেক সময় দিতেন। দিনে বেশির ভাগ সময় বসে থাকতেন বাড়ির সামনের পুকুর ঘাটে। অনেক সময় বড়শি দিয়ে মাছও শিকার করতেন।
রব্বান আরও বলেন, কাকার পৈতৃক ভিটায় আগের দিনের একটি চৌচালা ঘর বা রাউডি ঘর ছিল। যখন উনি আসতেন ওই ঘরে অবস্থান করতেন। সেখানে ঘরটি ভেঙে এখন ভবন করা হয়েছে। এতে মনে অনেক কষ্ট পেয়েছেন। এরপর থেকেই উনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসা কমিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেয়া কবি আল মাহমুদ ১৯৭৪ সালে গণকণ্ঠের সম্পাদক থাকাকালে কারাবরণ করেন। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক পদ থেকে অবসর নেন তিনি। সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি একুশে পদক ও বাংলা একাডেমিসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।
আজিজুল সঞ্চয়/এফএ/আরআইপি