বাইরে তালা দিয়ে ভেতরে কোচিং
রাজশাহীতে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে প্রাইভেট হোমের নামে চলছে কোচিং। এসব প্রাইভেট হোম নামের কোচিং সেন্টারগুলোতে প্রত্যেকে ব্যাচে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানো হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে প্রাইভেট হোমগুলো।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি এড়াতে নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষার্থীদের দ্রুত ভেতরে প্রবেশ করিয়ে বাইরে থেকে তালা দিয়ে কোচিং সেন্টারগুলো চলছে। এ কারণে কোচিং সেন্টার পরিচালনাকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
বুধবার সকালে সরজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত রাজশাহী মহানগরীর কাদিরগঞ্জ, বর্ণালীর মোড়, লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা, মালোপাড়া, সাহেববাজার এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ভবনের পাশে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট হোমের নামে চলছে কোচিং সেন্টার। এছাড়া নগরীর লক্ষ্মীপুর এবং মহিষবাথান এলাকাতেও কয়েকটি কোচিং সেন্টার তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সিটি কর্পোরেশন ভবনের অপর পাশে রানা ম্যাথ, অনিক ম্যাথ ও শুভ ম্যাথে চলছে শিক্ষার্থীদের কোচিং। সেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাচে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসছে। প্রতিটি ব্যাচে রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী। এর পাশেই মহিলা কলেজ সংলগ্ন কাদিরগঞ্জ এলাকায় ওয়াসিম প্রাইভেট হোমে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসছে। একই এলাকায় চলছে চ্যালেঞ্জার প্রাইভেট কেয়ারের কোচিং।
এছাড়া বুধবার সকালে মহানগরীর মহিণবাথান এলাকার প্রতিভা পাবলিক স্কুল পরিচালিত কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়েছে। এসব কোচিং সেন্টারে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা পড়তে আসছে। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরাও তাদের বাসায় শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন।
সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কোচিং সেন্টার পরিচালনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা কোচিং সেন্টার চালাচ্ছেন না, প্রাইভেট পড়াচ্ছেন।
চ্যালেঞ্জার প্রাইভেট কেয়ারের পরিচালক রাজশাহীর বাগমারার উপজেলার মোহনগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শাহাদত হোসেন বলেন, অভিভাবকদের চাপের কারণেই আমরা শিক্ষার্থীদের পড়াতে বাধ্য হচ্ছি।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কোচিং সেন্টারের মালিক বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকেই কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু কিছু কোচিং মালিক প্রাইভেট হোমের নাম দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না- তা বুঝতে পারছি না।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে থেকে ও পরীক্ষা চলাকালে কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে। তারপরও কেউ যদি গোপনে কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট হোম চালায় তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/পিআর