অবশেষে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা
ডাকবাংলোতে আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ ও জোর করে ইয়াবা সেবন করানোর ঘটনায় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবশেষে থানায় মামলা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী সোমবার রাতে সাটুরিয়া থানায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। তারা হলেন সাটুরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল ইসলাম।
এর আগে রোববার মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীমের কাছে ওই তরুণী দুই পুলিশ কর্তকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। গঠন করা হয় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল) হাফিজুর রহমান জানান, সোমবার এ বিষয়ে তদন্ত করা হয়। দিনভর প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে ওই তরুণীর পুলিশ সুপারের কাছে যে অভিযোগ করেছেন তার সত্যতা রয়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারের ওই তরুণী সাটুরিয়া থানায় এসআই সেকেন্দার হোসেন ও এএসআই মাজহারুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্ত করবেন সাটুরিয়া থানার (ওসি তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ। ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের জন্য ওই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষাসহ প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্ট করা হবে।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর ইসলাম বলেন, ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় উপ-পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মাজহারুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিরা বর্তমানে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এর আগে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, সাভারের আশুলিয়া এলাকার তার এক খালা সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দারের কাছে প্রায় তিন লাখ টাকা পাবেন। পাওনা টাকা আদায়ে গত বুধবার বিকেলে ওই খালা তাকে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় যান।
এ সময় এসআই সেকেন্দার তাদের দুজনকে নিয়ে থানাসংলগ্ন সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে থানার এএসআই মাজহারুল ইসলাম হাজির হন। তরুণী ও তার খালাকে আলাদা কক্ষে আটকে রাখে তারা। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা তরুণীকে ইয়াবা সেবন করিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। দুইদিন পর শুক্রবার সকালে তরুণী ও তার খালার হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দিয়ে সেকেন্দার তাদের সাটুরিয়া থেকে চলে যেতে বলেন। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে তরুণীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয় বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী সাভারে ফিরে প্রথমে তার এক পরিচিত সাংবাদিকের কাছে এ ঘটনা জানান। সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে মৌখিকভাবে এ ঘটনা জানার পর মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার শনিবার রাতেই অভিযুক্ত এসআই সেকেন্দার ও মাহারুলকে থানা থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।
বিএম খোরশেদ/বিএ