সাড়ে তিন লাখ মানুষের জন্য তিন চিকিৎসক
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ৩৩ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও মাত্র সাতজন কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে চারজনই প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত রয়েছেন। মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে এ অঞ্চলের সাড়ে তিন লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা। এতে নদী ভাঙন কবলিত এ উপজেলার সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়তই স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বিধৌত ইসলামপুর উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের সাড়ে তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এছাড়া নিকটবর্তী মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ ইসলামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপর নির্ভরশীল।
সূত্রে জানা যায়, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতাধীন তিনটি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ হাসপাতালটিতে ৩৩ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ আটজন চিকিৎসক কাগজ-কলমে কর্মরত থাকলেও চারজন ঢাকা ও টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন স্থানে প্রেষণে রয়েছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও একটি দীর্ঘদিন যাবত অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসক সংকটের কারণে পূর্ণাঙ্গ অপারেশন থিয়েটারটি প্রায় পাঁচ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। এতে দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলের রোগীরা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, হাসপাতালে এক্স-রে ও ইসিজি করতে এসে সরকারের নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি টাকা দাবি করায় অসহায় অনেক মানুষ সেবা নিতে এসে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও বহিরাগত দালালদের দৌরাত্ম, অপরিচ্ছন্নতা ও চিকিৎসক সংকটের কারণে অনেক রোগী বিনা চিকিৎসায় ফিরে যান।
ভুক্তভোগী রোগীরা জানান, হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ অপারেশন থিয়েটারে এক সময় সিজারসহ প্রতিদিন বিভিন্ন অপারেশন করা হতো, এতে গরিব মানুষ উপকৃত হতো। দীর্ঘদিন ধরে অপারেশন বন্ধ থাকায় এলাকাবাসী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং অপারেশন থিয়েটারের মূল্যবান যন্ত্রাংশ অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হচ্ছে। একমাত্র আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটিও দীর্ঘদিন যাবৎ নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একেএম শহীদুর রহমান জানান, চিকিৎসক সংকটে হাসপাতাল চালাতে সমস্যা হচ্ছে। প্রেষণ বাতিলসহ শূন্যপদে চিকিৎসক চেয়ে ঊর্ধ্বতন দফতরে জানানো হয়েছে।
আসমাউল আসিফ/আরএআর/এমএস