জজ-ম্যাজিস্ট্রেট সেজে প্রতারণা, আটক ৫
গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানাধীন বাইমাইল এলাকা থেকে পাঁচ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্প সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
আটকরা হলেন- টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী থানার বলিভদ্র গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মাসুদ রানা (৩৫), তার স্ত্রী গুলশান আরা লিজা (২৮), একই জেলার ভুয়াপুর থানার মাটিকাটি গ্রামের মৃত নাজির হোসেনের ছেলে রাজু আহম্মেদ (৪০), তার স্ত্রী আকলিমা আক্তার (২৫) ও পাবনা সদর থানার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের খাঁপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে তাছলিমা খাতুন।
আটক হওয়া মাসুদ রানা ও লিজা কোনাবাড়ী এলাকার কফিল উদ্দিন সরকারের বাড়ি, রাজু ও আকলিমা বাইমাইল এলাকার হাজী নুরুল ইসলামের ও তাছলিমা খাতুন গাজীপুরের হোতাপাড়ার মাসুমা গেইট এলাকার মেডামের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
র্যাব পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, একটি প্রতারক চক্র নিজেদেরকে জেলা প্রশাসক, জেলা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে জেলার বিভিন্ন সরকারি দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন বড় বড় কলকারখানা মালিকদের মোবাইল কোর্টের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে, লাশ সৎকার নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানার বাইমাইল হাজী কলোনীর নুরুল ইসলামের বাড়িতে ভুয়া জেলা জজ ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের একটি চক্র অবস্থান করছে। এর প্রেক্ষিত্রে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৪টি মোবাইল ফোন ও নগদ চার হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদেরকে এই প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করে। তারা নিজেদেরকে বিভিন্ন সময় ভুয়া জেলা জজ ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসক আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তা, ম্যানেজার জাতীয় ভাওয়াল উদ্যান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন মিল কারখানার মালিক এবং নিরীহ মানুষদেরকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়। এই প্রতারক চক্রের সদস্য বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে এবং এদের প্রত্যেকেরই ৭ থেকে ৮ টি করে বিকাশ নম্বর রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আমিনুল ইসলাম/আরএআর/এমকেএইচ