ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তিস্তা ব্যারেজে চলছে ভারী যানবাহন

প্রকাশিত: ০৪:৪৯ এএম, ২৬ আগস্ট ২০১৫

দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের উপর দিয়ে আবারো রাতের অন্ধকারে ভারী যাহবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। সিসি ক্যামেরা নষ্ট দেখিয়ে খুলে রাখা রয়েছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে মালবোঝাই ভারী যানবাহন পারাপারের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ মতে, ভারী যানবাহন যাতে ব্যারেজের ওপর দিয়ে পারাপার করতে না পারে সেজন্য ব্যারিকেড নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেই ব্যারিকেডের খুঁটি ভেঙে দিয়ে ও একটি গাছ কেটে তিস্তা ব্যারেজের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য ও কিছু অসাধু কর্মকর্তা রাতের অন্ধকারে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভারী যানবাহন পারাপারের সুযোগ করে দিচ্ছে।

এদিকে তিস্তা ব্যারেজে যে ৪টি সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণের জন্য লাগানো হয়েছিল সেগুলো অকেজো করে দেয়া হয়েছে। এতে কেপিআই ওয়ানের আওতায় থাকা তিস্তা ব্যারেজটি পুনরায় হুমকির মুখে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিবিশন সূত্র মতে, দীর্ঘ দিন ধরে তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে ৪০ মেট্রিক টন মালবোঝাই ট্রাক পারাপারের কারণে ব্যারেজের বেশ কিছু স্থানে ফাটল দেখা দেয়। ব্যারেজটি রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ গত বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। এ জন্য ব্যারেজের দুই প্রান্তের সড়কে স্থাপন করা হয় গোলপোস্টের ন্যায় ব্যারিকেডের আরসিসি খুঁটি। তবে এই ব্যারিকেডের মাঝপথে শুধু প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, ভ্যান চলাচলের অনুমতি রাখা হয়।



এলাকাবাসী ও সেচ সুবিধাভোগী কৃষকরা অভিযোগ করে জানায়, সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে তিস্তা ব্যারেজের ব্যারিকেডের খুঁটি ভেঙে দিয়ে রাতের অন্ধকারে ৪০ মেট্রিক টন মালবোঝাই ট্রাক পারাপার করা হচ্ছে। এতে তিস্তা ব্যারেজটি পুনরায় ফাটলসহ হুমকির মুখে পড়েছে।

জানা যায়, ১৫শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিস্তা ব্যারেজটি নীলফামারীর ডালিয়ায় তিস্তা নদীর উপর নির্মণন করা হয়েছিল নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলার ১ লাখ ১১ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের জন্য। ১৯৯৮ সাল থেকে এটি সেচ কার্যক্রম শুরু করে।

এই অবস্থায় ২০০২ সালে বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ব্যারেজের উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য ইজারা ব্যবস্থা চালু করেন। অতিরিক্ত মালবোঝাই ট্রাক পারাপারের ফলে ব্যারেজের ২, ২০,২১ ও ২৪ নম্বর গেটের উপরে ফাটল ধরে। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যারেজের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল গত বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে বন্ধ করে দেয়।

সরেজমিনে দেখা যায়,  তিস্তা ব্যারেজ দিয়ে যাতে ভারী যানবাহন পারাপার করতে না পারে সে জন্য নির্মিত আরসিসি খুঁটি ভেঙে ও একটি গাছ কেটে ওই পথ দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে। রাতের অন্ধকারে ওই পথে যে ভারী যানবাহন চলাচল করে তার চাকার চিহ্ন দেখা যায়। পাশাপাশি তিস্তা ব্যারেজে যে ৪টি সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণের জন্য লাগানো ছিল সেগুলো অকেজো করে দেয়া হয়েছে।

তিস্তা ব্যারেজ রক্ষা কমিটির সভাপতি ও খালিশা চাপানি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার জাগো নিউজকে বলেন, রাতের অন্ধকারে ভারী যাহবাহন চলাচলের কারণে আবারো চরম হুমকির মুখে পড়েছে এটি।

তিস্তা ব্যারেজের দোয়ানী আনসার ক্যাম্পের ইনচার্জ আবুল কাশেম জাগো নিউজকে বলেন, কয়েক দিন থেকে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। ব্যারেজের পাহারায় ৭-১০জন আনসার সদস্য রয়েছে। রাতের অন্ধকারে কে কিভাবে ভারী যাহবাহন পারাপার করছে আমার জানা নেই।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তিস্তার ব্যারেজে ভারী যানবাহন বন্ধ করতে না পারলে চরম বিড়ম্বনায় ও হুমকির মুখে ব্যারেজটি পড়বে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের যান্ত্রিক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সামছুদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, সিসি ক্যামেরাগুলো যন্ত্রপাতি নস্ট হওয়ায় তা মেরামতের জন্য খুলে রাখা হয়েছে।  

জাহেদুল ইসলাম/এসএস/এমএস