ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

প্রথমবারের মতো ইমুর ঘরে নতুন অতিথি

জেলা প্রতিনিধি | কক্সবাজার | প্রকাশিত: ০১:৫০ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রথমবারের মতো বাচ্চা ফুটেছে বিরল প্রজাতির পাখি ইমুর ঘরে। পার্ক প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম বাচ্চা পেয়ে বেশ আমুদে মেজাজে রয়েছে বেষ্টনীতে থাকা স্ত্রী প্রজাতির দুটি এবং বিপরীত লিঙ্গের একটি ইমু পাখি। বেষ্টনীর চারপাশে বানরের বিচরণ থাকায় তাদের খপ্পর থেকে রক্ষায় এক মুহূর্তের জন্যও বাচ্চাটিকে চোখের আড়াল করছে না ইমু পাখির দল।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর পার্কটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে প্রথমবারের মতো গত শনিবার ভোরে জন্ম নেয়া এ বাচ্চাটির পরিচর্যার জন্য একসঙ্গে দু’জন কর্মচারীকে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট রাজীব কুমার দে ও ড্রেসার দিদারুল আলম সার্বক্ষণিক পাহারায় রেখেছেন এই বাচ্চাটিকে।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, পার্ক প্রতিষ্ঠার পর এ পার্কে ইমু পাখি ছিল একটি। এরপর আনা হয় আরো দুটি ইমু পাখি। এ দুই ইমু পাখি জব্দ করা হয়েছিল যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাড়ি থেকে।

ওয়াইল্ড লাইফ স্কাউট রাজীব কুমার দে জানান, প্রতিবছরই ইমু পাখি একসঙ্গে ৭-৮টি করে ডিম পাড়ে। কিন্তু কোনোবারই এসব ডিম থেকে প্রজনন (বাচ্চা ফোটানো) সম্ভব হয়নি। সব ডিমই নষ্ট হয়ে যায়। এবারও ৭টি ডিম পাড়ে ইমু পাখি। তার মধ্যে একটি মাত্র ডিম থেকে একটি বাচ্চা ফুটেছে। বাকিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।

সাফারি পার্কের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, পার্ক প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম ইমু পাখির ঘরে একটি নতুন অতিথি পেয়েছি। অনেক আগে থেকেই আমাদের চেষ্টা ছিল ইমুর প্রজনন বাড়াতে। কিন্তু বার বার ডিমগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এতদিন প্রজনন সম্ভব হয়নি।

মাজহার আরো জানান, ইমু পাখি সাধারণত সর্বভুক প্রজাতির পাখি। এরা কলমি শাক, কঁচি শাক ও পাহাড়ি লতা-গুল্ম, কীটপতঙ্গ, পোল্ট্রি ফিড, গম, ভুট্টা ও চাল ভাঙা খেতে অভ্যস্ত। এরা পাখির মধ্যে বেশ শক্তিশালী। পানির কাছাকাছি ঝোপঝাড়মুক্ত উম্মুক্ত ঘাসভূমিতে এদের আবাসস্থল।

ইমু পাখি ৫ থেকে সাড়ে ৬ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার হয়ে থাকে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক ইমুর ওজন ৩৮ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত হয়। এদের আয়ুষ্কাল প্রকৃতিতে ৫ থেকে ১০ বছর এবং আবদ্ধ অবস্থায় এরা বাঁচে ১২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত।

ইমু পাখি ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দৌড়াতে পারে। এদের পায়ের আঘাত বেশ শক্তিশালী। এমনকি অনেক সময় মানুষ মারাও যায়। তাই খুব সতর্কতার সঙ্গে এদের পরিচর্যা করতে হয়। পার্কে আগত ইমুর ঘরের নতুন অতিথিকে বেশ পরিচর্যার মাধ্যমে বড় করে তোলা হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

পার্কে বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, বনমোরগসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণির প্রজননও অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুপাতে বরাদ্দ না থাকায় এসব প্রাণিকে যথাযথ তদারকি করতে বেশ হিমসিম খেতে হচ্ছে পার্ক কর্তৃপক্ষকে।

সায়ীদ আলমগীর/এফএ/এমএস

আরও পড়ুন