নৌকার অফিস পোড়ানো সেই বিএনপি নেতারা আ.লীগে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিস পোড়ানো মামলার পালাতক আসামি বিএনপির তিন নেতা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।
দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তারা। বুধবার বিকেলে স্থানীয় টইটং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত নবনির্বাচিত এমপি জাফর আলমের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমপির হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন বিএনপির এসব নেতা।
এ সময় পেকুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওসি) অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অথচ নৌকার অফিস পোড়ানো মামলায় পুলিশের খাতায় পলাতক ছিলেন তারা।
আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া বিএনপি নেতারা হলেন- পেকুয়া মাতবর পাড়া গ্রামের আহমদ নুরের ছেলে পেকুয়া উপজেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি একাধিক নাশকতা মামলার পলাতক আসামি মাহবুল করিম, পেকুয়া সদর ইউনিয়নের আবদুল হামিদ সিকদার পাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ইউপি সদস্য মো. ইসমাইল সিকদার এবং পেকুয়া মইয়াদিয়া গ্রামের মোস্তাক আহমদের ছেলে উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমইউপি মমতাজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, বিএনপির এসব নেতা একসময় ছাত্রলীগের কর্মী ছিল। তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তারা দলে যোগ দিলেও কোনো পদ-পদবি দেয়া হয়নি। তাদেরকে আমরা পর্যবেক্ষণে রাখব। যদি তাদের কর্মকাণ্ড ভালো হয় তাহলে দলে রাখব, না হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তবে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া তিনজনের মধ্যে মাহবুব মেম্বারের নামে শুধু মামলা রয়েছে। বাকিদের নামে মামলা নেই।
পেকুয়া থানা সূত্র জানায়, গত ২২ ডিসেম্বর পেকুয়া বাজারস্থ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে পেট্রলবোমা মেরে জ্বালিয়ে দেয়ার অভিযোগে জামায়াত-বিএনপির ১৫২ জনের নামে পেকুয়া থানায় মামলা করেন সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন। এ মামলার ৪নং আসামি পেকুয়া উপজেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুল করিম এবং ১৫নং আসামি ইসমাইল সিকদার।
মামলার বাদী নাসির উদ্দিন বলেন, পেকুয়ায় নির্বাচনী অফিসে আগুন দেয়ার ঘটনায় আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি দলের স্বার্থে। সংবর্ধনা সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম না। তাই আমি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বারবাকিয়া ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, এসব অতিথি পাখি সুবিধাভোগী। মামলা থেকে রেহাই পেতে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। এটা দলের জন্য অশুভ সংকেত।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কফিল উদ্দিন বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক কৌশল। বিএনপিকে দুর্বল করতে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করছি। এতে দলের কোনো সমস্যা হবে না। যারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা বিষয়টি বুঝতে অক্ষম।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পেকুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন ভূইয়া বলেন, পালাতক ওসব আসামিকে ধরতে কাজ করছে পুলিশ। তারা আত্মগোপনে থাকায় ধরতে পারিনি। তবে তারা আওয়ামী লীগে যোগদানের বিষয়টি আমার জানা নেই।
সায়ীদ আলমগীর/এএম/পিআর