শীতলক্ষ্যায় রাজত্ব করতেই সহকর্মীকে খুন
নিজের জাল চুরি হয়েছে পরিমল চন্দ্র বর্মনের (৫২)। এখন তিনি বেকার। অপরদিকে সহকর্মী বোরহান উদ্দিন (৩৮) একাই শীতলক্ষ্যা নদীতে রাজত্ব করছিলেন। তাই বোরহানকে খুন করেন পরিমল ও তার ভাতিজা কমল চন্দ্র বর্মন। পরে মরদেহ জাল দিয়ে পেঁচিয়ে নৌকার সঙ্গে বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন।
ঘটনাটি গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নারগানা এলাকার। ঘটনার ১৪ দিন পর কালীগঞ্জ, পলাশ, টঙ্গী ও ঢাকা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, কালীগঞ্জ ও পলাশ থানা পুলিশ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় বুধবার বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদীর দক্ষিণ নারগানা এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের পর ওইদিন বিকেলেই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। নিহত এবং আটক সবাই উপজেলার দক্ষিণ নারগানা এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিমল ও বোরহান শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ ধরার কাজ করতেন। বেশ কিছুদিন আগে পরিমলের জাল নিখোঁজ হয়। সন্দেহের তীর যায় বোরহানের দিকে। পরিমলের জাল হারিয়ে যাওয়াতে বোরহান একাই শীতলক্ষ্যায় রাজত্ব করতে থাকেন। তাই চাচা পরিমল ও ভাতিজা কমল মিলে বোরহানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত ২ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বোরহান নদীতে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বের হলে পরিমল ও কমল মিলে তাকে খুন করেন। পরে মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন।
নিখোঁজের ৫ দিন পর বোরহানের স্ত্রী তানিয়া বেগম বাদী হয়ে গত ৭ জানুয়ারি কালীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রি (নং ২৩৬) করেন। ঘটনার ১৩ দিন পর (১৫ জানুয়ারি) নিহতের শ্যালকের কাছে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন পরিমল ও ভাতিজা কমল। স্থানীয়রা পরিমলের ছেলে পাপন চন্দ্র বর্মনসহ (১৮) ৩ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
পরে আটকদের তথ্যের ভিত্তিতে ১৫ জানুয়ারি কালীগঞ্জ, পলাশ, টঙ্গী ও ঢাকা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, কালীগঞ্জ ও পলাশ থানা পুলিশ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় শীতলক্ষ্যা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। রাত পর্যন্ত উদ্ধার করতে না পেরে ওই দিনের মতো উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করেন। পরদিন সকাল থেকে ফের উদ্ধার কাজ শুরু হয়। পরে বিকেলে উপজেলার দক্ষিণ নারগানা এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. আবু বকর মিয়া জানান, আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের সত্যতা মিলেছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আব্দুর রহমান আরমান/এফএ/পিআর