সুবর্ণচরে গণধর্ষণ, আরও দুইজন গ্রেফতার
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলীতে স্বামী-সন্তাদের বেঁধে রেখে নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো- আবুল ও মুরাদ। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রোববার সন্ধ্যায় সুবর্ণচর উপজেলার হারিছ চৌধুরী বাজার থেকে এজাহারভুক্ত মামলার সাত নম্বর আসামি আবুলকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগে সেনবাগ উপজেলার ছাত্তারপাইয়া এলাকার একটি ইটভাটা থেকে মুরাদকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে শনিবার রাতে ফেনীর সুলতানপুর এলাকা এজাহারভুক্ত নয় নম্বর আসামি সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে সোহেল, স্বপন, বেচু, বাসু ওরফে কুড়াইল্যা বাসু, আবুল ও সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হলো। পুলিশি তদন্তে এজাহারের বাইরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ঘটনার মূল নির্দেশদাতা সাবেক ইউপি সদস্য রুহুল আমিন, তার সহযোগী জসিম ও হাসান আলীকে গ্রেফতারসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ড শুনানি শেষে রোববার দুপুরে সাত আসামির পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতের বিচারক নবনীতা গুহ তাদের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ বলেন, গ্রেফতারকৃত ১০ জন আসামির মধ্যে ছয়জন এজাহারনামীয় ও চারজন এজাহার বহির্ভূত আসামি। ভিকটিমের ২২ ধারা জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। চরজাব্বার থানা দূরে হওয়াতে তদন্তের সুবিধার্থে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মামলাটি দ্রুতসময়ে তদন্ত করে চার্জশিট দেয়া এবং বিচারকাজ দ্রুতসময়ে শেষ করে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোসহ অভিযুক্তদের শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর সকালে নির্যাতিত গৃহবধূ ভোট দিতে গেলে নৌকার কয়েকজন সমর্থক তাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বলে। তিনি তখন ধানের শীষে ভোট দেয়ার কথা বললে তাদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। এ সময় তারা তাকে ‘তোর কপালে শনি আছে’ বলে হুমকি দেয়। পরে কেন্দ্র থেকে দ্রুত বের হয়ে বাড়ি ফিরে যান গৃহবধূ।
এরপর রোববার রাত ১২টার দিকে একই এলাকার ১০-১২ জন তাদের বাড়িতে এসে প্রথমে বসতঘর ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে তারা ঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পিটিয়ে আহত করে। পরে স্বামী ও স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে (১২) বেঁধে রেখে টেনে-হিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে তারা।
একপর্যায়ে তারা তাকে গলা কেটে হত্যার করতে উদ্যত হয়। এ সময় প্রাণ ভিক্ষা চাইলে তারা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বাড়ির উঠান সংলগ্ন পুকুর ঘাটে ফেলে চলে যায় তারা।
মিজানুর রহমান/এএম/আরআইপি