কুড়িগ্রামে ইমরানসহ জামানত হারাচ্ছেন ৩২ প্রার্থী
কুড়িগ্রামের ৪টি আসনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামানত রক্ষার ন্যূনতম ভোট না পাওয়ায় ৩২ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে আসনগুলোতে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৪০ জন প্রার্থী অংশ নেন। সবচেয়ে বেশি ১৬ জন প্রার্থী অংশ নেন কুড়িগ্রাম-৪ আসনে।
ভোটের দিন কিছু বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। তবে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি গোলাম হাবিব ও গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার এবং বিএনপির প্রার্থী আজিজুর রহমান ফলাফল ঘোষণার আগেই ভোট কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জন করেন।
এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ২ লাখ ২৯ হাজার ৪৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন কুড়িগ্রাম-২ আসনের মহাজোট (জাতীয় পার্টি) প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ এবং সবচেয়ে কম ২৫ ভোট পেয়েছেন গণফোরামের প্রার্থী মাহফুজার রহমান।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-১ আসনে ভোট পড়েছে ৩ লাখ ২১ হাজার ৯৬১ ভোট। এরমধ্যে বাতিল হয়েছে ২ হাজার ৫৫৩টি ভোট। আওয়ামী লীগের আছলাম হোসেন সওদাগর ১ লাখ ২১ হাজার ৯০১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। বিএনপির প্রার্থী সাইফুর রহমান রানা ১ লাখ ১৮ হাজার ১৩৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অন্যান্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি একেএম মোস্তাফিজুর রহমান ৪৪ হাজার ৭৩২ ভোট, তরিকত ফেডারেশনের লতিফুল কবীর ২৩০ ভোট, ইসলামী আন্দোলনের আব্দুর রহমান প্রধান ৩১ হাজার ২২৯ ভোট, জাকের পার্টির আব্দুল হাই ২ হাজার ৮৩১ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি জাহিদুল ইসলাম ১৭১ ভোট এবং জেপির রশীদ আহমেদ ১৮০ ভোট পেয়েছেন।
কুড়িগ্রাম-২ আসনে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪০টি। বাতিল ৫ হাজার ১১৮টি ভোট। মহাজোট (জাতীয় পার্টি) প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ ২ লাখ ২৯ হাজার ৪৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। অন্যান্যদের মধ্যে গণফোরাম ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আ ম সা আ আমিন ১ লাখ ৭ হাজার ১৪৬ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। অন্যান্যদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের মোকছেদুর রহমান ৩০ হাজার ৯৭৮ ভোট, বিকল্পধারার আবুল বাশার ২৯৫ ভোট, কমিউনিস্ট পার্টির উপেন্দ্র নাথ ৬৭০ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আব্দুর রশীদ ৪৭৩ ভোট, বাসদের মোনাব্বর হোসেন ৪৮২ ভোট ও স্বতন্ত্র আবু সুফিয়ান ৯৩৫ ভোট পান।
কুড়িগ্রাম-৩ আসনে ২ লাখ ২৬ হাজার ২৭২টি ভোট প্রদত্ত হয়েছে। বাতিল হয়েছে ৪ হাজার ৪১৪টি ভোট। এই আসনে ভোটের ৫ দিন আগেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক এমপি ডা. আক্কাছ আলী সরকার আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এরপরও তিনি ১০ হাজার ৭০০ পেয়েছেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যাপক এমএ মতিন ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। বিএনপির তাসভীরুল ইসলাম ৭০ হাজার ৪২৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এছাড়াও অন্য প্রার্থীরা হলেন, ইসলামী আন্দোলন গোলাম মোস্তফা মিঞা ৬ হাজার ৩৫৭ ভোট, কমিউনিস্ট পার্টির দেলওয়ার হোসেন ২৩১ ভোট, জেপির মনজুরুল হক ১ হাজার ৫১০ ভোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হাবিুর রহমান ১১২ ভোট, বাসদের সাইদ আখতার আমীন ১৩৪ ভোট।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনে ভোট প্রদত্ত হয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫০৪টি। বাতিল হয়েছে ২ হাজার ১০৫টি ভোট। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আশরাফ-উদ-দৌলা আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে ভোটের আগের দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও তিনি ৩৩৩ ভোট পেয়েছেন। এখান থেকে আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন ১ লাখ ৬২ হাজার ৬৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। বিএনপির প্রার্থী আজিজুর রহমান ৫৫ হাজার ৯৬০ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। অন্যান্যদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি গোলাম হাবিব ৭ হাজার ৩১৮ ভোট, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার ২ হাজার ৭৭৫ ভোট, এসএম জাহাঙ্গীর আলম ৪২৯ ভোট, আবিদ আলভী জ্যাপ ৩০২ ভোট, আবুল হাশেম ৪১ ভোট, ইউনুছ আলী ৯৩ ভোট, ইমান আলী ৫১৩ ভোট, ইসলামী আন্দোলনের আনছার উদ্দিন ৩ হাজার ৫৪১, বাসদের আবুল বাশার মঞ্জু ৫২৭ ভোট, গণতন্ত্রী পার্টির মো. আব্দুস সালাম কালাম ১০৯ ভোট, ওয়াকার্স পার্টির মহিউদ্দিন আহম্মেদ ৫০৬ ভোট, গণফোরামের মাহফুজার রহমান ২৫ ভোট, জাকের পার্টির শাহ আলম ১ হাজার ২৯৩ ভোট পেয়েছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগ পেলে সেই প্রার্থীর জামানত রক্ষা হবে। এর কম পেলে সেই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
নাজমুল হোসাইন/বিএ