ফেনীর তিন আসনে পুনঃনির্বাচনের দাবি
ফেনীর তিনটি আসনে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ প্রার্থীরা। রোববার পৃথক স্থানে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি করেন ফেনী-১ আসনের রফিকুল আলম মজনু, ফেনী-২ আসনের অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি ও ফেনী-৩ আসনের আকবর হোসেন।
ভোটের দিন সকালে নির্বাচনী এলাকা ছাগলনাইয়া ও বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্র দখল, জাল ভোট ও এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন ফেনী-১ আসনের বিএনপি প্রার্থী রফিকুল আলম মজনু।
তিনি বলেন, ছাগলনাইয়া উপজেলার পূর্ব ছাগলনাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মহাজোট প্রার্থী ও জাসদ নেত্রী শিরীন আখতারের কেন্দ্র। এ কেন্দ্রে প্রথম দেড় ঘণ্টায় প্রতি বুথে ২৯৫টি ভোট কাস্ট হয়েছে। কেন্দ্রে কেনো নারী ভোটারের উপস্থিতি না থাকলেও সেখানেও আড়াইশ’র মতো ভোট কাস্ট হয়েছে যেটা কোন মানুষের পক্ষে দেয়া সম্ভবই না একমাত্র ভূত বা ফেরেশতা এসে দিতে পারে।'
মজনু বলেন, আমি নির্বাচনী এলাকার অনেক কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি কোন কেন্দ্রে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট নাই। সকালে কেন্দ্রে গেলে তাদের বের করে দেয়া হয়েছে। রাতেই ভোট বাক্স পূর্ণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার ভোট ডাকাতি করে ব্যালেট বাক্সভর্তি করেছে। তিনিও এ আসনে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান।
একই দিন দুপুরে কারচুপি, নেতাকর্মীদের মারধর ও এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দিয়ে ভোট ডাকাতির অভিযোগ করেছেন ফেনী-২ (সদর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন ভিপি। শহরের ফলেশ্বর এলাকায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন ভোটে ব্যাপক কারচুপি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগের দিন আমার নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়েছে। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রে ধানের শীষের কোনো এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রচুর জাল ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে আমি নির্বাচন
কমিশন, রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো ফল পাইনি। কেউ-ই আমার কথা শুনে পাশে দাঁড়ায়নি।
তিনি আরও বলেন, ভোটের নামে লুটপাট হচ্ছে। রীতিমতো ভোট ডাকাতি হচ্ছে। এসব ভোট বাতিল করা হোক। কেন্দ্রে বিএনপির
সমর্থকদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আর ভোট দেওয়ার মতো কোনো ব্যালটও নেই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই প্রার্থী বলেন, নির্বাচন বর্জনের বিষয়টি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত। তবে আমার আসনের যেসব কেন্দ্রে জাল ভোট হয়েছে, সেগুলো বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।
দুপুরে গণতন্ত্রের স্বার্থে পুনরায় ভোট দেয়ার দাবি জানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ফেনী-৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজী) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আকবর হোসেন। দাগনভূঞা পৌরসভার আলাইয়াপুর নিজ বাসভবনে প্রহসনের নির্বাচন করছে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে দাবি করেন। কেন্দ্র দখল, জাল ভোট ও নিজদলীয় এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয় সরকার দলীয় কর্মীরা।
দুটি উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রায় ৩০ জন বিএনপি নেতকর্মী আহত হয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। আকবর হোসেন বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত গণগ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। তিনি এসবের তীব্র নিন্দা জানান।
তিনি আরও জানান নির্বাচন বর্জনের বিষয়টি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত। কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হবে তাৎক্ষনিক আপনাদের জানিয়ে দেয়া হবে।
ফেনীর তিনটি আসনে ৩৫৮টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৯২৭টি কক্ষে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে মোট ভোটার ১০ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮৫ জন। এদের মধ্যে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৩৭৭জন পুরুষ ও ১ লাখ ৯৪ হাজার ৫৭৯ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। নির্বাচনে এ আসনে ১২৬টি ভোট কেন্দ্র ও ৭২৩টি ভোটকক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রাশেদুল হাসান/এসএএস/এমএস