গোপালগঞ্জের কোথাও নেই বিএনপি
গোপালগঞ্জের তিনটি সংসদীয় আসনে নির্বাচনী মাঠে নেই বিএনপির প্রার্থীরা। তাদের নির্বাচনী এলাকার কোথাও কোনো পোস্টার-ব্যানার টাঙানো হয়নি। প্রার্থীদের পক্ষে নেই মাইকিং, চলছে না প্রচার-প্রচারণা। উঠান বৈঠক, সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন না বিএনপির কোনো প্রার্থী।
স্থানীয় ভোটারদের প্রশ্ন, গোপালগঞ্জের ৩টি আসনের বিএনপি প্রার্থীরা কোথায়? ভোটের সময় হাতের নাগালে চলে এলেও বিএনপির কোনো প্রার্থীর দেখা নেই। যেন গোপালগঞ্জের কোথাও নেই বিএনপি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জ নানা কারণে ঐতিহাসিক জেলা। গোপালগঞ্জ জেলায় পাঁচটি উপজেলা নিয়ে তিনটি সংসদীয় আসন গঠিত। জেলার তিনটি আসনই ভিআইপি।
বিগত সব নির্বাচনে এ তিনটি আসন থেকে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এবারও তিনটি আসনে লড়ছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা।
গোপালগঞ্জ-১ আসনে এবার লড়ছেন বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান। এ আসন থেকে পর পর চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এবারও নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন ফারুক খান। নির্বাচনী এলাকার সব স্থানে লাগানো হয়েছে ফারুক খানের ব্যানার-পোস্টার।
এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি সরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে নির্বাচনী মাঠে দেখা যায়নি। এলাকায় লাগনো হয়নি তার কোনো পোস্টার-ব্যানার।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে বিএনপি প্রার্থী সরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গোপালগঞ্জ-২ আসনে এবার লড়ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। এ আসন থেকে পর পর সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনি। এলাকায় তার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। এলাকার মানুষ ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখা এবং বিপদে তাদের পাশে না থাকায় সিরাজুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন। ফলে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। বর্তমানে গোপালগঞ্জে তার বাড়িতে অবস্থান করলেও মাঠে নেই তিনি। এলাকায় লাগানো হয়নি তার কোনো পোস্টার-ব্যানার। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোট চেয়ে মাঝে মধ্যে ভোট চান সিরাজুল ইসলাম।
গোপালগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসনটি থেকে পর পর ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনি। ইতোমধ্যে তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পান স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি এসএম জিলানী। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। এর আগে এ আসনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামানত হারান জিলানী। এবার এ আসনে নেই তার কোনো প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনী এলাকায় লাগানো হয়নি কোনো পোস্টার-ব্যানার।
গোপালগঞ্জের তিনটি আসন ভিআইপি হলেও দেশের অন্যান্য স্থানের মতো এসব আসনে কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। এলাকায় রয়েছে সুন্দর নির্বাচনী পরিবেশ। তবে বিএনপি কোনো প্রার্থী মাঠে নেই।
এস এম হুমায়ূন কবীর/এএম/এমএস