ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

৫ জন খুন, উদ্বিগ্ন আ.লীগের নেতাকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | রাজশাহী | প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি ২৪ দিন। এরই মধ্যে গত এক সপ্তাহে রাজশাহী অঞ্চলের চার জেলায় খুন হয়েছেন আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকর্মী। নির্বাচন সামনে রেখে এ সহিংসতা বাড়ায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

খুনের ঘটনায় জড়িতরা ধরা না পড়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। তবে বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। তাদের দাবি, এখনো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সর্বশেষ ৪ ডিসেম্বর রাতে নওগাঁর পত্নীতলায় নিজ বাড়ির সামনে নৃশংসভাবে খুন হন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইছাহাক হোসেন। সাবেক পৌর মেয়র ইছাহাক হোসেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

পার্টি অফিস থেকে রাতে বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। বাড়িতে প্রবেশের আগে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে তার প্রাইভেটকার চালকও আহত হন। এটিকে টার্গেট কিলিং বলছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর থেকে উদ্বিগ্ন তারা।

এর আগে ৩ ডিসেম্বর পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান ভাউডাঙ্গা গ্রামের লস্কর খাঁ ও আব্দুল মালেক শেখ।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, দুই পক্ষই এ সংঘর্ষে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর।

ভাঁড়ারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাস ও সুলতান গ্রুপের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। দুই পক্ষই নিজেদের শক্তি বাড়াতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করেছিল। এ খবর পুলিশের কাছেও ছিল। কিন্তু পুলিশ সময়মতো পদক্ষেপ না নেয়ায় শেষ পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণ হারায় দুইজন।

গত ১ ডিসেম্বর দুপুরে শিশুপুত্রের সামনে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর কলেজ গেটে ছুরিকাঘাতের শিকার হন তাহেরপুর পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি চঞ্চল কুমার। ওই দিন বিকেলে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আর্ট বাবুর নেতৃত্বে একদল চরমপন্থী সর্বহারা ক্যাডার এ হামলা চালায়। এ ঘটনায় কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

তাহেরপুর পৌর মেয়র আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন, সর্বহারা ক্যাডার ও ১০টি হত্যা মামলার আসামি আর্ট বাবুর নেতৃত্বে একজন চরমপন্থী ক্যাডার প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেফতারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। এরই মধ্যে আর্ট বাবু আরেকটা খুন করল। এ নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন।

গত ২৮ নভেম্বর সকালে নাটোরের নর্থবেঙ্গল সুগার মিলস গেটে লালপুর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহারুল ইসলামকে কুপিয়ে খুন করে সন্ত্রাসীরা। দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, খুনের আগে জাহারুলকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল।

এছাড়া ৪ ডিসেম্বর দুপুরে নাটোর শহরের বড়গাছা এলাকায় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কর্মী রুবেলকে ছুরিকাঘাত করে প্রতিপক্ষরা। ঘটনার পাল্টা জবাবে নাটোর এনএস সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার আলম রিয়নের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। গুরুতর আহত রিয়নসহ তিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি এম খুরশীদ হোসেন বলেন, এসব হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। যারাই অপরাধী, যে পক্ষেরই হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য অপরাধীদেরও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে এসব ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত নয় বলেও দাবি করেন তিনি।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/এমকেএইচ

আরও পড়ুন