রংপুরে বাবলুর লোকজনের ওপর হামলা, ঝাড়ু মিছিল
রংপুর-২ (বদরগঞ্জ তারাগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়া উদ্দিন বাবলুর পক্ষে মনোনয়ন জমা দিয়ে ফেরার সময় হামলার শিকার হয়েছেন তার লোকজন। বুধবার সন্ধ্যায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা জাপার নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায়।
অন্যদিকে জিয়া উদ্দিন বাবলুর মনোনয়ন ঠেকাতে রাতে বদরগঞ্জে উপজেলা জাপা অফিস থেকে দফায় দফায় ঝাড়ু মিছিল বের করা হয়। এ কারণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে গোপনে তারাগঞ্জে বাবলুর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়। মনোনয়নপত্র দাখিলের খবর ছড়িয়ে পড়লে জাপার শত শত নেতাকর্মী তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে মনোনয়ন জমা দিয়ে ফেরার সময় তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের আতিয়ার রহমান, জিয়া উদ্দিন বাবলুর ব্যক্তিগত সহকারী রাজু ও তার সঙ্গে আসা লোকজনকে লাঞ্ছিত করেন তারা। এ সময় জিয়া উদ্দিন বাবলুর গাড়ি বহরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে সেখান থেকে সটকে পড়ে বাবলুর লোকজন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বুধবার বিকেল ৫টার কিছু আগে গোপনে রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে জাপা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে আসেন জিয়া উদ্দিন বাবলুর পক্ষে তার ব্যক্তিগত সহকারী। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তারাগঞ্জ উপজেলা জাপার নেতাকর্মীরা বহিরাগত প্রার্থী ঠেকাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাইরে জড়ো হন। একপর্যায়ে গোপনে মনোনয়নপত্র দাখিল করে বের হওয়ার সময় তাদের ওপর চড়াও হন নেতাকর্মীরা। এ সময় ইটপাটকেল ও গাছের ডাল ভেঙে গাড়ি বহরে হামলা করা হয়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে সেখান থেকে সঠকে পড়েন মনোনয়ন জমা দিতে আসা লোকজন।
এদিকে জিয়া উদ্দিন বাবলুর মনোনয়ন ঠেকাতে বদরগঞ্জে দফায় দফায় ঝাড়ু মিছিল বের করা হয়। এছাড়াও জিয়া উদ্দিন বাবলুর পক্ষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়ন জমা করা হবে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে সেখানেও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন জাপার নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে দুপুরের পর থেকেই মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। শেষ পর্যন্ত তারাগঞ্জে মনোনয়ন জমা দিয়ে ফেরার পথে হামলার কবলে পড়েন জিয়াউদ্দিন বাবলুর লোকজন।
রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবুল বলেন, জিয়া উদ্দিন বাবলুকে ঠেকাতে জাপার নেতাকর্মীরা একজোট হয়েছিল। বাবলু বহিরাগত। তাকে কেন এখানকার লোক ভোট দেবে। তার পক্ষে অপরিচিত কিছু লোক গোপনে এসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হন।
এ বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেরাজ হোসেন বলেন, জিয়া উদ্দিন বাবলুর পক্ষে আতিয়ার রহমানসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তবে মনোনয়নপত্র দাখিল করে চলে যাওয়ার সময় বাইরে কী হয়েছে তা আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা ও তারাগঞ্জের ইউএনও আমিনুর রহমান বলেন, উপজেলা পরিষদের বাইরে কী হয়েছে তা আমার জানা নেই।
তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিন্নাত আলী জানান, জিয়া উদ্দিন বাবলুর লোকজনের ওপর কিছু লোক ক্ষুব্ধ হয়ে হামলার চেষ্টা চালায়। এ সময় পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
জিতু কবীর/আরএআর/জেআইএম