আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক
রাজশাহীতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলে আচরণবিধি ভঙ্গের হিড়িক পড়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির প্রার্থীরা বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী-সমর্থকদের নিয়ে হাজির হচ্ছেন।
তবে এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই নির্বাচন দফতরের। যদিও বিষয়টি নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন দেখছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বিষয়টি প্রার্থীদের আগেভাগেই জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রার্থীরা সেটি মানছেন না।
নির্বাচন দফতরের সূত্রমতে, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজশাহীর সংসদীয় ছয়টি আসনে ১৭ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেন নয় প্রার্থী। বুধবার দুপুর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৬৪ প্রার্থী।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রাজশাহী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে শোডাউন করে নির্বাচন দফতরে হাজির হন তিনি।
দুপুরে রাজশাহী-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু মনোনয়নপত্র জমা দেন শোডাউন করে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগে কোর্ট শহীদ মিনারে সমাবেশ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন মিনু।
বুধবার গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দেন রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সদস্য সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনিও বিপুল নেতাকর্মী সঙ্গে নিয়ে শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রাজশাহী-৬ আসনের সংসদস সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এর আগে উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক ঘিরে বিশাল পথসভা করেন শাহরিয়ার। তাতে হ্যান্ডমাইকে বক্তব্য দেন তিনি।
গত ২৬ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন রাজশাহী-২ আসনে মহাজোটের প্রার্থী ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। পরদিন ২৭ নভেম্বর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে রাজশাহী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তারাও বিধি ভেঙে শোডাউন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
প্রার্থীদের এসব কর্মকাণ্ড নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ বলে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহীর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার পারভেজ রায়হান। তিনি বলেন, মনোয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো ধরনের মিছিল বা সমাবেশ বা মোটরসাইকেল মিছিল বা শোডাউন করা যাবে না।
এ নির্দেশনাটি প্রত্যেক প্রার্থীকে আগেভাগে জানানো হয়েছে। প্রার্থীরা সেটি মেনে চলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা সেটি মানেননি। বিষয়টি তদন্ত করে বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/এমএস