ভাইয়ের কারণে কপাল পুড়লো আনোয়ারের
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁর ছয়টি আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। সোমবার বিকেল থেকে প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেয়া শুরু হয়। এ ছয়টি সংসদীয় আসনে মোট ১৩ জনকে প্রাথমিকভাবে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
তবে নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রানীনগর) আসন থেকে বাদ পড়েছেন বিএনপির ত্যাগী নেতা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু। এ আসন থেকে তার বড় ভাই সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরসহ দুইজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আলমগীর কবীরকে মনোনয়ন দেয়ায় এ আসনের দুই উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, নওগাঁর আত্রাই-রানীনগর উপজেলা এক সময় জঙ্গি এলাকা এবং বাংলাভাইয়ের এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান আলমগীর কবীর। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবীর এলডিপিতে যোগ দেন। একই বছরে এলডিপি থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। প্রায় এক যুগ ধরে তার ছোট ভাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু এই দুই উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিভাবক হিসেবে ছিলেন। নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখের সময় পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আগামী নির্বাচনের লক্ষে তিনি এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছেন।
কিন্তু হঠাৎ করেই তার বড় ভাই আলমগীর কবীর পুনরায় বিএনপিতে ফিরে এসেছেন এবং দল থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এতে দুই উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ ভোট দিতে যাবেন না বলেও মন্তব্য করেছেন।
এবার জেলার ছয়টি আসনে বিএনপি প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে ভুল হয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ায় সর্বশেষ কে ধানের শীষের টিকিট পাবেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
রানীনগর থানা বিএনপির সভাপতি এসএস আল ফারুক জেমস বলেন, বিএনপির ত্যাগী নেতা আনোয়ার হোসেন বুলু মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দলীয়ভাবে বসে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিব।
নওগাঁর ছয় আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্তরা হলেন-
নওগাঁ-১ (সাপাহার-পোরশা-নিয়ামতপুর) আসনে নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. ছালেক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং পোরশা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা লায়ন মাসুদ রানা।
নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শামসুজ্জোহা খান এবং জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী।
নওগাঁ-৩ (বদলগাছী-মহাদেবপুর) আসনে নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্য রবিউল আলম বুলেট এবং সাবেক ডেপুটি স্পিকারের ছেলে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী জনি।
নওগাঁ- ৪ (মান্দা) আসনে মান্দা থানা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সামসুল আলম প্রামাণিক এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকরামুল বারী টিপু।
নওগাঁ-৫ (নওগাঁ সদর) আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি ও নওগাঁ পৌর মেয়র আলহাজ নজমুল হক সনি এবং সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু।
নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রানীনগর) আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর এবং শেখ রেজাউল ইসলাম রেজু।
আব্বাস আলী/আরএআর/জেআইএম