রাজশাহীতে ছাড় পাচ্ছেন না বাদশা!
রাজশাহী-২ (সদর) জোটের মনোনয়ন নিয়ে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। রাজশাহী-২ আসনে নব্বই-উত্তর গণতান্ত্রিক নির্বাচনে প্রথম নৌকার জয় হয় ২০০৮ সালে।
নৌকা প্রতীকে সেই জয় এনে দেন ফজলে হোসেন বাদশা। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও জোটের প্রার্থী হন তিনি। সেই বার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন বাদশা। তবে এবার তাকে সহজেই ছাড়তে নারাজ রাজনৈতিক মিত্ররা। আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা ছাড়াও এই আসনে জোটের মনোনয়ন চাইছে জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।
শনিবার রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বাদশা। একই দিন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন নগর জাসদের সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সিদ্দিকী শিবলী। যদিও এই আসনে এখনও আওয়ামী লীগের কোনো নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। দলে দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে অংশ নিয়েছেন নগর ও জেলা আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা।
এরা হলেন, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী, নগর আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান ও আহসানুল হক পিন্টু এবং জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট পূর্নিমা ভট্টাচার্য।
জোট বাদেও ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে যাচ্ছেন ফজলে হোসেন বাদশা। এরই মধ্যে এই আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। বাদশা-মিনু বাদেও এই আসনে এ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, ইসলামী আন্দোলন নেতা ফয়সাল হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ রানা।
তবে এদের মধ্যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মিজানুর রহমান মিনু। এই আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পরপর দু্ই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়া টানা ১৭ বছর তিনি রাজশাহী সিটির মেয়র ছিলেন।
এবারও মিনু এই আসনে সরকার বিরোধী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। ফলে জোটের লড়াইয়ে উৎরে গেলেও ভোটের লড়াইয়ে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে ফজলে হোসেন বাদশাকে।
জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, দু-দুবার নৌকা নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও ফজলে হোসেন বাদশার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেননি। ফলে নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়েছে। এই বাস্তবতায় বাদশা আবারও প্রার্থী হলে এ আসন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে মহাজোটকে।
তবে জোটের মনোনয়ন নিয়ে নির্ভার ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে রাজশাহীর উন্নয়নে ২০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে। কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। রাজশাহীর মানুষ উন্নয়নের পক্ষে রয়েছে। আগামী নির্বাচনেও উন্নয়নের পক্ষেই রায় দেবে জনগণ।
এ দিকে, নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মামনুন আহমেদ অনীক জানিয়েছেন, গত ১২ নভেম্বরে থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজশাহীর ৬টি আসনে ৪১ জন মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। আর জমা দিয়েছেন মাত্র একজন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস/আরআইপি